হত্যা মামলার বাদী হওয়ায় প্রধান আসামী হলেন রাসিক কাউন্সিলর কামাল

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২১; সময়: ৩:৫৫ অপরাহ্ণ |
হত্যা মামলার বাদী হওয়ায় প্রধান আসামী হলেন রাসিক কাউন্সিলর কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভাতিজা হত্যা মামলার বাদি হওয়ায় প্রতিপক্ষ প্রধান আসামী করেছেন রাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেনকে। গত ৩০ জুন ডিঙ্গাডোবা মোড়ে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারী হয়। এই মারামারীতে দুইজন নিহত হন।

কিন্তু এই মারামারীর সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবী করেছেন ভাতিজা হত্যা মামলার বাদি ও শফিকুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামী কাউন্সিলর কামাল হোসেন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্যাডে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ দাবী করেন। তাঁর স্বাক্ষরিত এই প্যাডে তিনি উল্লেখ করেছেন বর্তমানে ৩নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে তিনি ২০০২ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেছিলেন। তিনি সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। প্রতিবারই তার ভোট বেড়েছে। তিনি কোনদিনও কখনো কারও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াননি। তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতার মাঝেও রাসিক মেয়র এ,এইচ,এম খায়রুজ্জামান লিটন এর নির্দেশে এলাকার মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন ।

তিনি আরো উল্লেখ করেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার ওয়ার্ডের চিন্থিত ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও মানুষের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে মানুষকে সর্বশান্ত করা একটি চক্র একত্রিত হয়ে আমার বিরোধিতা শুরু করে। তাঁরা নীতিহীন ও স্বার্থবাজ। তাঁদের কোন আদর্শ নেই। যে দল ক্ষমতায় তারা সে দলের হয়ে যায়। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শফিকুল ও হাবিব গ্রুপ এক হয়ে আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে পরাজিত হয়। সেই থেকে আমার উপরে তাদের রাগ। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের পর ও ৩রা নভেম্বর আমাদের বাড়ীতেও হামলা করা হয়। আমার বড় ভাই মাহাতাব আলী দীর্ঘ ২০ বছর ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ।

তিনি আরো উল্লেখ করেন শফিকুল ইসলাম ও তার ভাই আব্দুস সালাম, তাঁর ছেলে শিশির ও শাওন এবং শফিকুলের ছোট ভাই নাজির, বড় ভাই মজিবুর ও তাঁর ছেলে মানিকসহ তাদের পরিবার দাশপুকুর, বহরুমপুর, ডিঙ্গাডোবা ব্যাংকলোনীসহ এই এলাকার চিন্থিত ভূমিদস্যু। মানুষের পরিবারের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের জমি/বাড়ী দখল করাই হচ্ছে এই চক্রটির প্রধান কাজ। এই কাজে তাঁদের অন্যতম সহযোগি ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবিব ও তাঁর ভাইয়েরা ।

নিহত শফিকুল ও তার বংশের লোকজন বিগত ২২ বৎসর পূর্বে চরখানপুর এলাকায় জমি দখল করতে গিয়ে কালাম নামের এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে হত্যা করেছিলো। টাকার বিনিময়ে সেটি মিমাংসা করে। শফিকুলের বড় ভাই আব্দুস সালাম ও হাবিব কাউন্সিলর এর বড় ভাই আব্দুর রশিদ ঠিকাদারি ও জমির ব্যবসায়ীক পার্টনার।

তাদের সাথে গত একবছরে যুক্ত হয়েছে বহরুমপুর এলাকার ঠিকাদার হারুন। দাশপুকুর মোড়ের পশ্চিমে যেই জমি নিয়ে সংঘাত সেই পুরো সেই জায়গায়টি সালাম, তাঁর ছেলে শিশির, নাজির, শফিকুল, রশিদ ও হাবিবসহ অন্যরা ঠিকাদার হারুন কে পাইয়ে দিবে এই শর্তে হারুন তাদের সাথে থাকে। এই চক্রটি গত একমাস পূর্বে আমার বড় ভাই ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাতাব আলীর ছেলে সেলিমের ক্রয়সূত্রে দখলকৃত জমিটি দখল নেওয়ার জন্য পূরোনো একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে সেলিমকে গ্রেফতার করায় ঠিকাদার হারুন।

পরবর্তীতে ঠিকাদার হারুনের বুল ড্রেজার দিয়ে সেলিমের অধীনে থাকা সিটি বাইপাশ সংলগ্ন দোকানঘর রাতের আঁধারে গুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও জায়গাটি দখল করার জন্য গত ২৯ জুন মঙ্গলবার বহরুমপুর মোড়ে হারুন ঠিকাদারের ডন এন্টার প্রাইজ এর চেম্বারে আব্দুস সালাম, শফিকুল, রশিদ, হাবিব, শিশির ও নাজিরসহ আরো অনেকেই ঘন্টার পর ঘন্টা বৈঠক করেন। সেলিমের বাবা মাহাতাব আলী ও তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা সকালে সেই জায়গায় বেড়া দিতে গেলে সালাম, রশিদ, শিশির, হাবিব, নাজির, শফিকুল তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। আমার আরেক বড় ভাই গিয়াস উদ্দীনের বড় ছেলে জয়নাল আবেদিন(৪৫) কে হত্যা করে।

ঝামেলার কথা শুনে আমি সেখানে পৌঁছে দেখি আমার ভাতিজার রক্তাক্ত দেহ, আমার স্ত্রী সালমা বেগমের রক্তাক্ত শরীর, আমার আরেক বড় ভাই জামাল রক্তাক্ত অবস্থায়, আমার বড় ভাই ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাতাব আলীকে তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বার থেকে বের করে রক্তাক্ত করে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে। আরো দেখি আমার ভাতিজির ছেলে অর্থ্যাৎ আমার নাতী সোহেল রানা সড়কে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এমতবস্থায় আমি লোকজনের সহযোগিতায় আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিছুক্ষণ পড়েই কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ভাতিজা জয়নাল আবেদিনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরের দিন আমি বাদী হয়ে রাজপাড়া থানায় একটা হত্যা মামলা দায়ের করি। আমি জয়নাল আবেদিন হত্যা মামলার বাদী হওয়ায় আমার অপরাধ। যার কারণে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এবং আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যেই আমাকে হুকুমের আসামী করেছে ঐ চক্রটি।

এলাকার কু-চক্রী মহল, ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে এবং সে ধারাবাহিকতায় আমার এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। প্রকৃত সত্য ঘটনা উদঘাটন করে প্রকৃত দোষিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে শাস্তির দাবী জানান তিনি।

  • 6
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে