পুঠিয়ায় কৃষিপণ্য ৪০ কেজিতে মণ কার্যকর, খুশি কৃষক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২০; সময়: ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ |
পুঠিয়ায় কৃষিপণ্য ৪০ কেজিতে মণ কার্যকর, খুশি কৃষক

মোহাম্মদ আলী, পুঠিয়া : দেশের উত্তরাঞ্চলের মধ্যে একটি বড় ব্যবসাকেন্দ্র রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাট। এখান থেকে সারা দেশে কৃষিপণ্য যায়। এই বাজারের ছিল নিজস্ব ওজনরীতি। সারা দেশে ৪০ কেজিতে মণ ধরা হলেও বানেশ্বর হাট বাজারে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কৃষিপণ্য নেওয়া হত ওজনে অনেক বেশি। আমের মণ ধরা হতো ৪৮ কেজিতে, পাইকারি মাছের বাজারে নেওয়া হয় ৪৬ কেজিতে মণ । পেঁয়াজ, রসুন ও খেজুরের গুড় মণ ৪২ কেজিতে ।

এই বাজারের ব্যবসায়ীরা এক মণের দামে ৪০ কেজির ওপরে যেটুকু বেশি নেন, তার নাম দিয়েছেন ‘ঢলন’। বাজারের রীতি অনুযায়ী, কৃষক ‘ঢলন’ দিতে বাধ্য থাকেন। গত ২৪ অক্টোবর শুক্রবার স্থানীয় প্রশাসন এক আলোচনায় ব্যবসায়ীদের এই ‘ঢলনপ্রথা’ বাতিল করেছেন। ফলে এই বাজারে আর কোন কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য ৪০ কেজির উপরে মণ হবে না। ৪০ কেজিতে মণ পেয়ে খুশি কৃষক। ব্যবসায়ীরা এত দিন কৃষকদের বুঝিয়েছিলেন কৃষিপণ্যের ওজন পরে কমে যায়। সে কারণে এই ‘ঢলন’ দিতেই হবে। এভাবে বানেশ্বর বাজারে দীর্ঘদিন ধরে এই ঢলনপ্রথা চালু আছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন চাষিরা।

তাই সদ্য যোগদানকৃত ইউএনও নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ ওজনে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েই ৪০ কেজিতে মণ নিয়ম কার্যকর শুরু করেছেন এবং উপজেলার সকল হাট বাজারে মাইকিন করে জানিয়ে দেন যেন ডিজিটালে ওজন ও ৪০ কেজিতে মণ নেওয়া হয় । এ নিয়ম কোন ব্যবসায়ী বা আড়তদার অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়।

বানেশ্বর হাটে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে আসা কৃষক আব্দুল মমিন বলেন, বানেশ্বর হাটে দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজ, রসুন ও খেজুরের গুড় ৪২ কেজিতে মণ নেওয়া হয়। আমের সময় ৪৮ কেজিতে মণ, মাছের ওজন ৪৬ কেজিতে মণ তার উপর আবার ব্যবসায়ীরা সমিতি করে কেজিতে ২ টাকা কম দায় এতে কৃষক কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করেও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে নায্য মূল্য ও ওজন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

কৃষক মোঃ আবুল কাশেম বলেন, আমরা এতদিন সব মাল ৪২ কেজিতে মণ হিসাবে বিক্রি করেছি। অনেক সময় অনেক ইউএনও এই নিয়ম ভাংঙ্গার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। নতুন এই ইউএনও স্যার যোগদান করেই গত শনিবার হাটে ৪০ কেজিতে মণ ধরে পেঁয়াজ বিক্রি করলাম। এই স্যার কৃষকের দুঃখ কষ্টের কথা ভাবে বলে এই কৃষক জানান।

এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ জানান, এক দেশে দুই নিয়ম হতে পারে না। সব জায়গায় ৪০ কেজিতে মণ শুধু এই পুঠিয়ার নিয়ম আলাদা কৃষিপণ্য ৪২ থেকে ৪৮ কেজিতে মণ। তাই আমরা ২৪ অক্টোবর এমপি মহাদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এনালগ প্রথা বাদ দিয়ে ডিজিটালে ওজন এবং ৪০ কেজিতে মণ নিয়ম কার্যকর করেছি। যা গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। এই নিয়ম বহাল থাকবে যদি কেউ ওজনে বেশি নেওয়ার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • 235
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে