গ্যালারিজুড়ে ভাঙা চেয়ার, বসার জায়গাই পাচ্ছেন না দর্শকরা
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সব ফেরা কি সুখকর হয়? বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ২৬ মাস পর আবার দর্শক ফিরেছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। তবে সমর্থকদের মন ভার! ফেরার মাঝে আছে অতৃপ্তি। মাঠে এসেছেন টিকিট কেটে। সকাল থেকে বিকেল অবধি খেলা দেখবেন পুরো ৯০ ওভার। তবে গ্যালারিতে ফেরা সমর্থকরা বসবেন কোথায়?
করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল খেলা। ৩০০ দিনের অধিক সময় পর চলতি বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশ দলের। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে দুই ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পায় সাগরিকা। ওয়ানডের পর টেস্টে দর্শকবিহীন ফাঁকা গ্যালারি। সেসময় ম্যাচ দুটি কাভার করতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসে মন খারাপ হয় সংবাদমাধ্যমকর্মীদের। স্থানীয় সমর্থকদের আকুতি ছিল মাঠে বসে খেলা দেখার জন্য।
বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট অনেকটাই মিরপুর কেন্দ্রীক। ওই হিসেবে খুব বেশি ম্যাচ পায় না চট্টগ্রাম। প্রিয় দলের খেলা গ্যালারিতে বসে দেখতে অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয় চট্টগ্রামবাসীকে। এবার অবশ্য সে সুযোগ মিলেছে প্রায় ২৬ মাস পর। সবশেষ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর আবার দর্শক ফিরেছে জহুর আহমেদে।
তবে তাদের ফেরাটা একেবারেই স্বস্তির নয়। গ্যালারির কোথাও চেয়ার আছে কোথাও নেই, চেয়ার থাকলেও সেগুলোর অবস্থা একাবারেই নাজুক। রক্ষণাবেক্ষণের দুর্বলতায় অধিকাংশ চেয়ারই ভেঙে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, এই চেয়ারগুলো না থাকলেই যেন ভালো হতো। কারণ সেই চেয়ারগুলোয় বসে খেলা দেখা রীতিমত অসম্ভব।
খেলা দেখতে আসা সাহেব আলী নামের এক সমর্থক আফসোস আর আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘কতদিন পর মাঠে আসলাম খেলা দেখতে। এসে তো দেখি বসার মতো জায়গা নেই। যে কয়েকটি চেয়ার ভালো আছে, সেখানে আগে যারা এসেছেন তারা বসেছেন। আমরা অনেকেই দাঁড়িয়ে খেলা দেখছি।’
গ্যালারির চেয়ারের পাশাপাশি দুপুরের তপ্ত রোদ বেকায়দায় ফেলেছে খেলা দেখতে আসা সমর্থমদের। করোনাভাইরাসের কারণে নির্দিষ্ট একটি গ্যালারিতে দর্শক প্রবেশের অনুমতি আছে শুধু। ২২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামে খেলা দেখার সুযোগ পাবেন ৫ হাজার সমর্থক। চার ক্যাটাগরিতে এই টিকিট বিক্রয় হলেও ইস্টার্ন গ্যালারির সমর্থকই বেশি। তবে এই গ্যালারিতে নেই কোন রোদ-বৃষ্টি প্রতিরোধী কোন ব্যবস্থা।
রিপন নামের এক সমর্থক ক্ষোভ উগড়ে দিয়েন বলেন, ‘এমনিতেই বসার জায়গা নেই। প্রায় সব চেয়ারই ভাঙা। এর মধ্যে রোদ। রোদের কারণে গ্যালারি যাওয়া কষ্টকর।’
২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ উপলক্ষে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম আধুনিকায়ন করা হয়। সে সময় গ্যালারির এক পাশ দোতলা করে পুরো স্টেডিয়ামে প্লাস্টিকের চেয়ার বসানো হয়। কিন্তু দশ বছর পর চেয়ারগুলোর বেহাল দশা। করোনাকালে মাঠে দর্শক প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরই অবস্থাটা যেন বেশি খারাপ হয়েছে। ২৬ মাস পর মাঠে ফিরেও স্বস্তি নেই সমর্থকদের।