রাজশাহীর পদ্মার চরে বাদাম চাষে বিপ্লব

প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২১; সময়: ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ |
রাজশাহীর পদ্মার চরে বাদাম চাষে বিপ্লব

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাঘা উপজেলারসহ অন্য এলাকা গুলোতে পদ্মার বালু চরে কৃষি অফিসের পরামর্শে ব্যাপকভাবে বাদাম চাষ হচ্ছে। পদ্মার চর এখন আর বালুকাময় নয়, পরিণত হচ্ছে শস্যভূমিতে। চাষাবাদ হচ্ছে বিভিন্ন রকমের দানাজাতীয় শস্য। পদ্মার বিস্তৃত চরজুড়ে এ বছর ব্যাপক হারে বাদামের চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি অফিস বলছেন, লক্ষ্যমাত্রা ২৫০ হেক্টরের চেয়ে বেশি পরিমাণে বাদামের চাষ হয়েছে।

চরাঞ্চলের মাটিতে পলি পড়ায় বিগত সময়ের চেয়ে এ বছর বাদাম চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। বাদাম বিপ্লবের ফলে বালুস্বর্গ এখন সবুজে ছেঁয়ে গেছে। ফসল তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দ্বিগুন ফলন ও লাভের আশা দেখছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয় ও দুটি পৌরসভা রয়েছে। এরমধে পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের বালু চরে শুধু বাদাম চাষ হচ্ছে। এ বছর ২৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও এর চেয়ে অনেক বেশি জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ২.১৭ মে. টন।

সরেজমিনে পদ্মার চরাঞ্চলের পলাশি ফতেপুর, করারি নওশারা, কালিদাদ খালি, চকরাজাপুর, দাদপুর ও টিকটিকিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এবছর অসংখ্য কৃষক বাদামের চাষ করেছেন। অনেকেই জমি বর্গা নিয়ে বাদাম চাষ করেছেন । ফসল ঘরে ওঠা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বহুগুনে ছাড়িয়ে যাবে। পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর চরের বাদাম চাষি গোলাম মোস্তফা, মজিবুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, কালিদাসখালি গ্রামের হাফিজুল ইসলাম, জালাল উদ্দীন, জহুরুল মালিথা, আকছেন শিকদার প্রত্যেকেই এ বছর বাদাম চাষ করেছেন। তারা জানান, বিগত যে কোনো বছরের তুলনায় এবার পদ্মার চরে বাদাম চাষ বেশি হয়েছে। গত বছর বাজারে বাদামের দাম ভাল পাওয়ায় এবার অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন বলে জানান।

চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়ন সদস্য ফজলুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৮ বিঘা জমিতে বাদামের চাষ করেছি। উপযুক্ত পরিচর্যা করায় বাদাম ক্ষেতে পোকার আক্রমণ কম হয়েছে। এতে পুরোদমে সহযোগিতা পেয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের। অন্যান্য বছরের চেয়ে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, বাদাম পরিচর্যায় খরচ ও সময় দুটোই কম লাগে।

গত বছর বাদামের ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকরা এবার আগাম বাদাম চাষ করেছেন। একই সাথে ফলন ভালো হওয়ায় চিনা জাতের বাদামের পাশাপাশি অনেকে ত্রি-দানা জাতের বাদামের আবাদও করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষে বাদামের বীজ বপন, পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে