রাজশাহীর বাঘায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে খড়

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১; সময়: ৪:০৪ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীর বাঘায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে খড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : খড়ের দামের সাথে, দাম বেড়েছে গরুর দুধের। আগের তুলনায় খড় ও দুধের কয়েকগুন দাম বেড়েছে রাজশাহীর বাঘায়। গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে, দুধ কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত গৃহস্থরা। অনেক পরিবারেই শিশুদের পুষ্টির জন্য প্রতিদিন দুধ কেনার চল রয়েছে। বাড়তি দামের ধাক্কায় কুপোকাত তাঁরা। আর দাম বেশির কারণে এখন কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর খাদ্য হিসেবে প্রয়োজনীয় ‘খড়’। কৃষি বিভাগ বলছে, খড়ের বহুবিধ ব্যবহারের কারনে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও পুকুর খননের কারণে ধানের আবাদও কমেছে।

বর্তমানে ১০০ আঁটি খড় বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। এ হিসেবে ১ আঁটি খড়ের দাম পড়ে ৬ টাকা। বেশি দামের কারণে মেশিনে খড় কেটে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অতীতে যা এইভাবে খড় কেটে কেজি দরে বিক্রি হয়নি। অন্যদিকে গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাথে দাম বেড়েছে দুধের। কয়েক মাস আগেও যে দুধের দাম ছিল ৩৫-৪০ টাকা লিটার। সেই দুধ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে।

গোখাদ্য ও দুধ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আগে ধান কাটার পরে মাঠে পড়ে থাকা খড় তুলে নিয়ে বাড়িতে রাখতেন চাষিরা। পরে গরুর খাদ্য হিসেবে সেই খড় বিক্রি করতেন তাঁরা। সেই খড় কিনে নিয়ে তার সঙ্গে অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মিশিয়ে গরুকে খাওয়াতেন। এখন মেশিন দিয়ে ধান কাটার পর জমিতে যে অল্প অবশেষ পড়ে থাকছে, তা মাঠেই পুড়িয়ে দিচ্ছেন চাষিরা। যার ফলে এখন আর চাইলেই মিলছে না খড়। এছাড়াও পুকুর খননের কারণে ধানের আবাদও কমে গেছে।

হাফিজুর রহমান নামের এক খড় ব্যবসায়ী জানান, গত আম মৌসুমে ১০০ আঁটি খড় বিক্রি করেছেন ১০০০ হাজার থেকে ১২০০ টাকায়। বর্তমানে ১০০ আঁটি খড় বিক্রি করছেন ৬০০ টাকায়।

আলম নামের এক দুধ বিত্রেতা জানান, আগে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করতেন ৪০-৪৫ টাকা দরে। এখন তা ৬০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করছেন। গরুর খাদ্যের দাম জোগানোর পর এখন সামান্য লাভেই দুধ বিক্রি করছি। তার মতে পরিস্থিতি এভাবেই চলতে থাকলে আগামীতে দুধের আরও দাম বৃদ্ধির প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দাম আরও না বাড়লে লাভের মুখ দেখা মুশকিল। দুধ ক্রেতাদের মতে,যদি গরুর খাদ্যের সঙ্কট হয়, তাহলে দুধের উৎপাদনেও তার প্রভাব পড়বে।

উপজেলা কৃষি অফিসার সফিউল্লাহ সুলতান বলেন, গরু-ছাগলের প্রধান খাদ্য খড়। এখন সেগুলো আমের মৌসুমে ঝুরিতেসহ বহুবিধ ব্যবহার হচ্ছে। অপরদিকে শ্রমিক সংকটের কারণে হারভেস্টার দিয়ে উঁচু করে ধান কাটেন গৃহস্তরা। এতে খরচ কম হলেও খড়ের উৎপাদন বেশি হয়না। এটাও সঙ্কটের কারণ। অনেক কৃষক খড়ের ভালো দামের কারণে ধানের আবাদ করছেন। তবে গোখাদ্যের সংকট মোকাবেলায় যারা হারভেষ্টার দিয়ে ধান কাটেন,তাদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, যদি গরুর খাদ্যের সঙ্কট হয়,তাহলে দুধের উৎপাদনেও তার প্রভাব পড়বে। সেক্ষেত্রে দাম বাড়তে পারে। তবে বেশি দামে গোখাদ্য কিনতে হচ্ছে গরুর মালিকদের। তার প্রভাব পড়ছে দুধের দামে। এরপরেও গোখাদ্যের দামের তুলনায় দুধের দাম পাচ্ছেন না গোয়ালারা।

  • 667
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে