চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘুষ ছাড়া মিলে না বয়স্ক ভাতা (ভিডিওসহ)

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২০; সময়: ৪:৩২ অপরাহ্ণ |
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘুষ ছাড়া মিলে না বয়স্ক ভাতা (ভিডিওসহ)

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জের বারঘরিয়া ইউনিয়নের মুক্তা বেগম। বয়স্ক ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও না পেয়ে দিয়েছিলেন ঘুষ। দু’বছর পার হয়ে গেলেও মেলেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড।

শুধু মুক্তা বেগম নয়, সরকারী সহায়তার জন্য এমন ঘুষের নজির ভুরিভুরি। বারঘরিয়া ইউনিয়নের কামার পাড়া ও মুচিপাড়ার হতদরিদ্রদের অভিযোগ, কাবিখা, বিধবা-বয়স্কভাতার মত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর কার্ড ঘুষ ছাড়া মেলে না। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দাবি, কারণ ছাড়াই বাতিল করা হয়েছে তাদের ওএমএস কার্ড।

মুক্তা বেগম বলেন, বয়স্ক ভাতার কার্ড করার জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। যখন টাকা দিয়েছিলাম তখন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে আপনার বয়স হয়ে গেছে, টাকা দিয়ে যান আপনার কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন কার্ড চাইতে গেলে তারা বলে যে আপনার বয়স হয়নি।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ঘুষ ছাড়া তারা ইউনিয়ন পরিষদে ওএমএস কার্ড চাইতে গেলে তাদেরকে কার্ড দেওয়া হয় না। উল্টো তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়।

২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায় ঘোষণার পর এলাকায় ভাঙচুর অগ্নিসংযোগসহ নানা নাশকতার নেতৃত্ব দেয় জামাত নেতা আবুল খায়ের। তবে ২০১৭ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগের এমপি আব্দুল ওয়াদুদের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন তিনি। চেয়ারম্যানের এই কর্মকান্ডের আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বারঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল খায়ের যে নব আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন সে আসলে জামাত নেতা ছিলো। সে তার জামাত এর পন্থায় কাজ করে যাচ্ছে। এতে আমাদের আ.লীগের আদর্শ নষ্ট হচ্ছে।

এদিকে জামাতের রাজনীতিতে জড়িত ও মামলা থাকার কথা স্বীকার করলেও অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবুল খায়ের।

তিনি বলেন, আমি ভোটে পাশ করার পরপরই জেল হাজতে চলে যাই। তারপর সেখান থেকে বের হয়ে এসে আমি শপথ নিয়ে এমপির নির্দেশনা অনুযায়ী আমি আওয়ামী লীগে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছিলাম। তারপর থেকে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়।

কার্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কারো নাম কাটিনি। মেম্বাররা হয়তো এটি করেছে। ১৩৬০টি কার্ডের মধ্যে কে কখন কোনটি থেকে কার নাম কেটেছে আমি সেই বিষয় জানিনা। আমার কাছে যখন যেটির সই চাওয়া হয়েছে আমি তা করে দিয়েছি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.কে.এম তাজকির-উজ-জামান এ বিষয়ে জানিয়েছেন, অতি শীঘ্রই তদন্ত রিপোর্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তারপর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে মাদক, চালচুরি ও আর্থ আত্মসাৎসহ ৭টি নাশকতার মামলা রয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে