বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে আম চাষিরা

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২০; সময়: ৩:৫৪ অপরাহ্ণ |
বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে আম চাষিরা

মোহাম্মদ আলী, পুঠিয়া প্রতিনিধি : রাজশাহীর পুঠিয়ায় চলতি বছর স্থানীয় চাষিদের সঠিক তদারকি করায় আম বাগান গুলোতে ব্যাপক হারে আম এসেছে। তারা আশা করছেন অনুকুল আবহাওয়া বিরাজ করলে গত বছরের চেয়ে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে।

কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এবার আম নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা। আমবাগানগুলোতে মাঝারী সাইজের আমের গুটিতে ভরপুর। ফলন নিয়ে হতাশার পাশাপাশি করোনার প্রভাবে বাজারের পরিস্থিতি ভালো থাকবে কিনা তা নিয়েই হতাশায় রয়েছেন। এতে চলতি মৌসুমে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় এবার আমের উৎপাদন এরিয়া প্রায় ১৫২৭ হেক্টর এবং লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮,৩২৪ মে. টন। যা গতবছর ছিল ১৮,৩০০ মে.টন এবং বাগান ছিল প্রায় ১৫২৫ হে. এরিয়ায়। বৈরি আবহাওয়ার কারণে গত মৌসুমে এই এলাকায় আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ১৮ হাজার তিনশত মে. টন। এবং চলতি বছর উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৮ হাজার তিনশত চব্বিশ মে. টন আম। এ বছর বেশীর ভাগ বাগান গুলোতে আমের মুকুলও ভালো এসেছিল এবং আবহাওয়া ভাল থাকায় আম ভাল ও বড় হয়েছে। এখন পর্যন্ত যে আবহাওয়া আছে আর ঝড় ও শিলা বৃষ্টি না হলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে চাষিরা।

উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আমের রেকর্ড পরিমান কুড়ি এসেছে। এবং মাঝারি সাইজের হয়ে গেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকার পুকুরপারসহ আমরুপালি চাষ বেশি হয়েছে। এবং খেরসাপাত ও ল্যাংড়া জাতীয় আম বেশী দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ফজলি, আশ্বনী, গোপালভোগ, দুধস্বর, কালুয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জুড়েও রয়েছে মাঝাড়ি সাইজের আম।

উপজেলার ধলাট এলাকার আম ও মৎস্য চাষী আবুল কাশেম বলেন, আমরা সময়মত তদারকি করায় বিগত বছরের চেয়ে এবার বাগান গুলোতে বেশী পরিমান আম এসেছে। আমার পুকুর পাড়ে আমরুপালী এবং বাগানে বিভিন্ন জাতের আম রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে না আসলে আমের বাম্পার ফলন হবে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে আম বাজারে বিক্রি করতে পারব কিনা সেটাই দেখার বিষয় আর যদি চাহিদা মত বিক্রি করতে না পারি তাহলে আমাদের অনেক লোকসান গুনতে হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন,বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কৃষির উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয় খোলা আছে এবং প্রতিটি কর্মকর্তা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠে থেকে কৃষি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এবং এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতি বছরের ন্যায় আম সংগ্রহের জন্য এরই মধ্যে ১৫ মে থেকে জাতভিত্তিক নির্দিষ্ট সময়সীমা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহ বিশেষজ্ঞ ও ফল ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে জেলা প্রশাসন থেকে গতকাল ৮ মে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও বানেশ্বর বাজারের আড়তদারদের সাথে মতবিনিময় করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা কৃষি অফিস ও পুলিশ বিভাগ সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্বিঘ্নে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করতে পারে এবং কোন অসাধু ব্যবসায়ী যাতে কাউকে প্রতারিত করতে না পারে সেই জন্য কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে