বাগমারায় সরকারি সার বিক্রির ঘটনায় মামলা

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২২; সময়: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় সরকারি সার বিক্রির ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায়  প্রণোদনার সার উত্তোলন করে বিক্রি করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে ) রাতে উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ইমতিয়াজ দেওয়ান বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে একটি বাগমারা থানায় মামলাটি দায়ের করেছে।

মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে। সেই সাথে সার বিক্রিয়ের সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম, সার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন ও রুহুল আমিন।

অভিযানের সময় আমজাদ হোসেনকে আটক করা গেলেও পলাতক রয়েছেন রুহুল আমিন। ইউপি সদস্য আব্দুর রহিমের নিকট থেকে সরকারি প্রণোদনার সার কম মূল্যে ক্রয় করে তা বিক্রয় করছিলেন ব্যবসায়ীরা। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের জোগসাজসে প্রণোদনার সমস্ত সার বিক্রয় করা হয়েছে বলে জানাগেছে।

গত বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিকরা ইউনিয়নের মদাখালী বাজারে আমজাদ হোসেনের দোকানে অভিযান চালিয়ে সরকারি সার বিক্রয় করা অবস্থায় তাকে আটক করে পুলিশ। আমজাদ হোসেনের বাড়ি একই ইউনিয়নের ক্ষুদ্রঝিনা গ্রামে। তিনি মেম্বারের নিকট থেকে ৩০ বস্তা সার ক্রয় করেছিলেন। এরই মধ্যে সেখান থেকে দুই বস্তা সার বিক্রিও করেছেন।

অন্যদিকে পুলিশের উপস্থিত বুঝতে পেরে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায় রুহুল আমিন নামের আরেক সার ব্যবসায়ী। তার বাড়ি ঝাড়গ্রাম গ্রামে। রুহুল আমিন ওই ইউপি সদস্যের নিকট থেকে ২০ বস্তা সার ক্রয় করেছেন। সারের মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া ও ডিএপি।

জানা গেছে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পাট অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে উপজেলার ২ হাজার ৪৬০ জন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে পাট বীজ বিতরণ করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাট চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে কৃষকদের। ঝিকরা ইউনিয়নের ২৫০ জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে পাট বীজ। ওই সকল কৃষককে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫ কেজি ইউরিয়া ও ৫ কেজি ডিএপি সার বিনামূল্যে প্রদানের জন্য সার গুলো প্রদান করা হয়।

সার বিতরণের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে ওই সকল কৃষকের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা মোতাবেক ইউরিয়া ও ডিএপি মিলে ৫০ বস্তা সার পাট মন্ত্রণালয়ের নিকট থেকে উত্তোলন করেছে। পাট গাছ বড় হলেও ঝিকরা ইউনিয়নের কৃষকরা সার পাননি। কৃষকের সেই প্রণোদনার সার উত্তোলন করে অবৈধ ভাবে দুইজন ব্যবসায়ির কাছে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছেন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও মেম্বার আব্দুর রহিম। বিষয়টি জানাজানি হলে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এদিকে আটক হওয়া সার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বলে জানাগেছে। ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম সার ব্যবসায়ীদের নিকট প্রতি বস্তা ইউরিয়া ৭০০ এবং ডিএপি ৭৪০ টাকায় বিক্রয় করেছেন। প্রণোদনার সরকারি সার বিক্রি করায় দুই দোকান সীলগালা করে দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

এদিকে উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ইমতিয়াজ দেওয়ান বলেন, তালিকা অনুযায়ী ২৫০ জন কৃষকের নামে বরাদ্দকৃত সার চেয়ামর‌্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়। সেই সার কৃষকদের মাঝে বিতরণ না করেই তাঁরা খোলা বাজারে বিক্রয় করে দিয়েছে। সরকারি সার বিক্রয় করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, প্রণোদনার সরকারি সার বিক্রয় করা ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ অজ্ঞাত কয়েক জনের মামলা হয়েছে। অভিযানে সরকারি সার বিক্রয়ের সময় ওই মামলার আসামী আমজাদ হোসেনকে আটক করা হয়। সেই সাথে দুই দোকান সীলগালা করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে