মধু মাসের শুরুতেই রাজশাহীর বাজারে ফলের রাজা আম

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২২; সময়: ১২:১৪ অপরাহ্ণ |
মধু মাসের শুরুতেই রাজশাহীর বাজারে ফলের রাজা আম

নুসরাত জাহান মিষ্টি : মধু মাস শুরু হতে না হতেই রাজশাহীর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ফলের রাজা আম। চলতি মৌসুমে প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী শুক্রবার থেকে গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হলেও গত ৪ দিন আগে থেকেই রাজশাহীর খুচরা বাজারে মিলছে আম। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার জমে উঠতে আরও সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে।

গেলো দুই বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন বাঁধা বিপত্তির মুখে পড়েছিলো রাজশাহীর আমের ব্যবসা। তবে এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় করোনা মহামারীর ভয় কাটিয়ে ব্যবসায়ীরা আটঘাট বেঁধেই প্রস্তুতি নিয়েছেন আম ক্রয়-বিক্রয়ের।

জানা যায়, রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমির আমবাগানে গাছে গাছে ঝুলছে আম। তবে অপরিপক্ক আম বিক্রি ঠেকাতে গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) আম সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী শুক্রবার (১৩ মে) থেকে গুটি আম সংগ্রহ শুরুর কথা থাকলেও বাজারে স্বল্প পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে গোপালভোগ আমও। আম চাষিরা জানান, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই গাছ থেকে পাকা গোপালভোগ আম তোলা হয়েছে।

রাজশাহীর সাহেব বাজারে কয়েকজন খুচরা আম ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন জাতের গুটি আম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও গোপাল ভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।

রাজশাহীর সাহেব বাজারের ফল ব্যবসায়ী শিমুল বলেন, ‘এবারে গত বছরের তুলনায় আমের উৎপাদন কম। তবুও গেলো ২ বছর করোনার কারণে ক্রেতাদের আগ্রহ কম ছিলো। কিন্তু এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ক্রেতাদের ভালো আগ্রহ আছে।’

আরেক ফল ব্যবসায়ী রঞ্জন জানান, প্রশাসনের দেওয়া সময় অনুযায়ী আম নামানো হচ্ছে এবং বাজারজাত করা হচ্ছে। এছাড়াও এ বছর গাছে গাছে আমের মুকুল কম এসেছে, তীব্র খরার কারণে গুটিও ঝরে পড়েছে অনেক। তার ওপর পোকার আক্রমণে অনেক গাছেই আমের ফলন কম হয়েছে।

বাজারের চাহিদার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কেবল আম বাজারে আসা শুরু হয়েছে। এজন্য আমের বাজার সেভাবে জমে উঠেনি। তবে আর সপ্তাহখানেকের মধ্যে বাজার জমতে পারে।’

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী শুক্রবার থেকে গুটিজাতের আম নামানো শুরু হয়েছে। এছাড়া ভোপালভোগ ২০ মে, লক্ষণভোগ ও রাণীপছন্দ ২৫ মে, হিমসাগর ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ও ফজলি ১৫ জুন, বারি-৪ ও আশ্বিনা ১০ জুলাই, গৌড়মতি ১৫ জুলাই এবং সবশেষ ইলামতি জাতের আম ২০ আগস্ট নামানোর তারিখ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বাজারে যেন অপরিপক্ব আম না যায় সেজন্য ফল গবেষক, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করেই আম নামানোর সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগে অপরিপক্ক আম নামালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, রাজশাহী মহানগর এবং ৯ উপজেলায় এ বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমির আমবাগানে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ মেট্রিক টন। যার হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ দশমিক ৫৯ মেট্রিক টন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে