গোদাগাড়ীতে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান অব্যহত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২; সময়: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ |
গোদাগাড়ীতে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান অব্যহত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা মিলনায়তনে গত ৮ জানুয়ারী হতে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম চলমান আছে। প্রতিদিন সকাল হতে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত হতে শিক্ষার্থীরা উপজেলা মিলনায়তন টিকা কেন্দ্রে এসে টিকা দিচ্ছে হুড়োহুড়ি করে। মানা হচ্ছে না কোন স্বাস্থ্যবিধি,নেই কোন স্বাস্থ্য সচেতন। টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভবকরা জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় এই ধরনের অব্যবস্থাপনা চলমান রয়েছে। করোনার জন্য সুরক্ষা নিতে এসে নিজেরাই আক্রান্ত হতে পারি বলে জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

জানাগেছে, উপজেলাল প্রায় ৯০টির অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২ হতে ১৮ বছর বয়সী ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করা হবে। এতে করে উপজেলা প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে গোদাগাড়ী সদরে এসে টিকা নিতে আসতে হচ্ছে। প্রতিদিন ৮ হতে ১০ টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে যে যেমন ভাবে পারছে হুড়োহুড়ি করে টিকা কেন্দ্রে প্রবেশ করে টিকা নিচ্ছে। কারো মুখো মাস্ক নেই আবার শারিরিক দূরত্ব মানার দৃশ্য দেখা মিলছে না সেখানে।

গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে তেমন কোন তদারকি চোখে পড়ে নি। টিকা কেন্দ্রে হুড়োহুড়ি করে ঢুকতে অনেকেই পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছে। একে অপরের উপর পড়ে গিয়ে কেউ বা অঞ্জান হয়ে বাড়ী ফিরছে।। পুলিশ দায়িত্বে থাকলেও সংখ্যায় কম সংখ্যক হওয়াতে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। দূরদূরান্ত হতে না এসে এলাকা ভিত্তিক বা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে গিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য আবেদন জানান শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

রেজাউল করিম নামের এক শিক্ষক বলেন, যে ভাবে করোনার টিকা শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে তা কোন নিয়মের মধ্যেই পড়ে না। এভাবে চলতে থাকলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী বলে জানান।

ধরমপুর পালপুল মাদ্রাসার শিক্ষক মাও. আব্দুর রহমান বলেন, এমনভাবে টিকা প্রদানে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা ভালো না। সঠিক পরিকল্পনায় ব্যবস্থা করলে দূর্ভোগ কমতো বলে জানান।

টিকা কেন্দ্রে ঢুকতে যাওয়ার সময় হুড়োহুড়িতে পড়ে আহত হওয়া এক শিক্ষার্থী জানান, আর কিছুক্ষণ হলেই নিচে চাপাই পড়ে মারা যেতাম । আর জীবনে এভাবে টিকা নিতে আসবো না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে।

এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে টিকা কেন্দ্রে গত দুইদিন হতে দেখা যায়নি। মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এই অব্যবস্থাপনা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরীর দৃষ্টি গোচর হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ডেকে যেভাবে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে তা মোটেও কাম্য নয়। এমন আয়োজন ও যাদের নির্দেশে করা হয়েছে তিনি সেই কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি যেভাবে টিকা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম তা করা হয়নি। সেই ভাবে দিলে এমন ভোগান্তি হতো না।

এদিকে বৃহস্পতিবার এমন অবস্থাপনার প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। উপজেলা চেয়ারম্য মো: জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, প্রশাসনকে যে ভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো তারা তা শোনে নি। তাদের এমন খামখেয়ালী অবস্থাপনার জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন আগামী দিনে যাতে কোন শিক্ষার্থীর কষ্ট না হয়। করোনার ছড়িয়ে না যেতে পারে এজন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশে সুন্দর পরিবেশে টিকা প্রদানের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জানে আলম বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার কে নিয়ে সুষ্ট পরিকল্পনায় টিকা প্রদানের ব্যবস্থানা গ্রহণ করা হয়েছিলো। অল্প সময়ে বেশী শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার জন্য একটু অবস্থাপনা হচ্ছে। আর শিক্ষা অফিসার ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমার নির্দেশনা সঠিক ভাবে পালন না করাই এমনটা হচ্ছে। আগামীতে এসব কাটিয়ে উঠে সুন্দর ভাবে কাজ করা হবে বলে জানান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে