বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২১; সময়: ৫:২৪ অপরাহ্ণ |
বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাগমারা : ও বাবা, তোরা আমাকে বাঁচা, এমন হততে কেন আমার। ডাক্তার আসপেনা বাবা? এমন প্রোলাপ করতে করতে চোখের সামনে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন ফাতেমা বেওয়া (৭৫) নামের এক বিধবা নারী। মৃত্যুর পরেই কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ববিতা রানীকে ডেকে আনলেন হাসপাতালের এক নার্স।

এমন মূহুর্ষ ঘটনা দেখেই অনেকেই কেঁদে ফেললেন হাসপাতালে। বিধবা নারীর দুই ছেলে আবুল কালাম ও মোবারক হোসেন মায়ের এমন দৃশ্য দেখে হতভাগ হয়ে গেলেন। তিনি চিকিৎকদের গাফলতি ও অবহেলাকে দায়ী করলেন। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

জানা যায়, রোববার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের কামনগর গ্রামের মৃত তরিকুল্যাহর স্ত্রী ফাতেমা বেওয়াকে তার ছেলে আবুল কালাম ও মোবারক হোসেন শ্বাসকষ্ঠ জনিত কারনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ববিতা রানী দায়ীত্বে থাকলেও সেখানে সহকারী চিকিৎসক হিসেবে দায়ী পালন করছিলেন রেজাউল করিম। তিনি শ্বাসকষ্ট জনিত রোগী ফাতেমা বেওয়াকে সাড়ে ১১ টায় ভর্তি করে ইসিজি করতে উপরে পাঠান। কিন্তু ভর্তিকৃত চিকিৎসক রোগীকে ভর্তির কাগজে ইসিজির বিষয়টি উল্লেখ করলেও তিনি ওই কাগজে ইসিজির নির্দেশ না লেখায় কর্তব্যরত নার্সরা তা করেন নি। রোগীর অবস্থার অবনতি হলেও কোন নার্স রোগীর পার্শ্বে যায়নি বলে রোগীর ছেলে মোবারক হোসেন অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, মা মারা যাবার পর পরই ১২ টার দিকে দায়ীত্বরত চিকিৎসক ববিতা রানী রোগীর পার্শ্বে আসেন এবং তার ভর্তির কাগজে বিভিন্ন ঔষুধের তালিকা তৈরী করেন। এক পর্যায়ে তিনি রোগীর অভিভাবককে ধমকান এবং মৃত রোগীটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে পাঠানোর কথা বলেন। তারা রাজশাহীতে নিতে অস্বীকার করলে মৃত রোগীকে ইসিজি করেন এবং বেঁচে আসে বলে অক্সেজেন দিয়ে তাদেরকে বুঝান। কিছুক্ষন পর তাদের রোগী মারা গেছে বলে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। চিকিৎসকের এমন অবলার কারনে রোগীর মৃত্যু অভিযোাগ করা হলেও তারা কোন খর্ণপাত করছেন বলে অভিযোগ করেন।

হাসপাতালে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগীর অভিযোগ, ববিতা রানী স্থানীয় আ’লীগের এক প্রভাবশালী নেতার আত্নীয় হওয়ায় তিনি কাউকে পরোয়া করেন না। অধিকাংশ সময় তিনি রোগী ও তাদের অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরন করে থাকেন। তার এমন কর্মকান্ডে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মানুষ।

এমন কর্মকান্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে দায়ীত্বরত চিকিৎসক ডাঃ ববিতা রানী কোন উত্তর না দিয়ে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন এবং চিকিৎসকের সাথে ফাজলুমু করছেন বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন।

অপর দিকে, বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম রাব্বানী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে আমি আপনাকে জানাতে পারবো বলে তিনি জানান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে