রাজশাহীতে সহকর্মীদের ফাঁসাতে নাম-ঠিকানা বদলে অধ্যক্ষের মামলা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২১; সময়: ১০:০৯ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে সহকর্মীদের ফাঁসাতে নাম-ঠিকানা বদলে অধ্যক্ষের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজের বাবার নাম ও ঠিকানা পাল্টে সহকর্মীদের নামে মামলা করেছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উমরুল হক।

অভিযোগ উঠেছে, অপর একটি মামলার সাক্ষীদের বেকায়দায় ফেলার জন্য তিনি এ মামলা সাজিয়েছেন। মামলা সাজাতে গিয়ে তিনি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষের বাবার নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট গোদাগাড়ী সরকারি কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ আবদুর রহমানের ওপর হামলা হয়। এ হামলায় অধ্যক্ষ কলেজের ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলার প্রধান আসামি এখনকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উমরুল হক। ওই মামলায় ১১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অভিযোগপত্র দিয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে গত ১১ অক্টোবর আসামিরা আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর ২৪ অক্টোবর উমরুল হক বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় কলেজের ১২ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এ মামলায় তিনি নিজের বাবার নামের পরিবর্তে আগের অধ্যক্ষ আবদুর রহমানের বাবার নাম আরসাদ আলী, গ্রামের নাম গুলবাগ বালুবাগান, জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যবহার করেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী উমরুল হকের বাবার নাম মুনসুর রহমান, গ্রামের নাম কেন্দুয়া, থানা নিয়ামতপুর, জেলা নওগাঁ।

সাবেক অধ্যক্ষ আবদুর রহমানের করা মামলার আটজন সাক্ষীকে উমরুল হক তাঁর মামলায় আসামি করেন। এই সাক্ষীদের অভিযোগ, তাঁদের বেকায়দায় ফেলার জন্য এ মামলা করা হয়।

কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবদুর রহমানের ভাষ্য, তিনি মামলা করায় তাঁর নামে আরও চারটি মামলা করা হয়েছে। তাঁকে অধ্যক্ষের পদ থেকে সরানোর জন্য এবং নানামুখী হয়রানির জন্য মামলাগুলো করা হয়েছে। আরও জটিলতায় ফেলার জন্য তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে তাঁর মামলার সাক্ষীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মামলা হওয়ায় তাঁকে কলেজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অথচ তিনি যে মামলা করেছেন, সেই মামলার প্রধান আসামি উমরুল হকের নামে অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে বরখাস্ত করেনি।

এ বিষয়ে গোদাগাড়ী কলেজের গর্ভনিং বডির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম জানান, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও তিনি সরাসরি বরখাস্ত করতে পারবেন না। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র পাঠাতে হবে, সেই বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

বাবার নাম ভুল লেখার ব্যাপারে জানতে চাইলে উমরুল হক জানান, কোনোভাবে ভুল হয়ে গেছে। এ জন্য তিনি থানায় জিডি করেছেন। ঠিকানা কীভাবে ভুল হলো- জানতে চাইলে তিনি জানান, একইভাবে ভুল হয়েছে। তাঁর ওপর হামলা হয়েছে এ জন্য তিনি মামলা করেছেন, কাউকে হয়রানি করার জন্য নয়।

বাবার নাম ও ঠিকানা পাল্টে করা মামলাটি তদন্ত করছেন গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মামুনুর রশিদ। তিনি জানান, এ মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে; প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ঘটনার সময় তাঁরা কেউই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে