বাগমারায় সংঘর্ষ, ৫ পুলিশসহ আহত ১০
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাগমারা : কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জে সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার পর পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের এ সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে একজন এসআইসহ পাঁচজন পুলিশ রয়েছেন। স্থানীয়ভাবে আহতদের চিকিৎসা দেয়া হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানা গেছে, বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ভবানীগঞ্জ নিউ মার্কেট এলাকায় কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রিপন কুমার সরকার (৩৮) নামের এক ব্যক্তি বিরুপ মন্তব্য করে। এতে স্থানীয় দোকানের কর্মচারিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধরে পিটুনি দেয়। এ সময় নিউ মার্কেটের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে রাখে। রিপনের বাড়ি উপজেলার বড়বিহানলী এলাকায়। তিনি নিউ মার্কেটের একটি দর্জির দোকানের কর্মচারি।
পরে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মুসল্লিরা এসে নিউ মার্কেট এলাকায় জড়ো হয় এবং রিপনকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টার করে। খবর পয়ে পুলিশ গিয়ে রিপনকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে মুসল্লিরা। এতে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে।
প্রায় ২০ মিনিট সংঘর্ষ চলাকালে মুসল্লিরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল আর পুলিশ টিয়ার সেল ছুঁড়ে মুসল্লিদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় ইটের আঘাতে পাঁচ পুলিশ আহত হন।
বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন পাঁচজন পুলিশ আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও সংঘর্ষের বিষয় নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম বলেন, স্থানীয় দু’জনের মধ্যে কথা কাটাখাটির জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। রিপনকে নিয়ে যাওয়ার সময় লোকজন কিছু ঢিল ছুড়ে। এতে পাঁচজন পুলিশ সামন্য আহত হন। বড় কোন ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। রিপুন কুমার পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পর রাজশাহী থেকে ভবানীগঞ্জে পাঠানো হয় অতিরিক্ত পুলিশ। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে পুজামন্ডপগুলোতেও। জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল ও পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে, এ ঘটনায় সন্ধ্যার দিকে বাগমারা নিউমার্কেট এলাকা পরিদর্শন করেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, বাগমারা ইউএনও ফারুক সুফিয়ার, থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ।
এ সময় উপস্থিত ব্যবসায়ী ও জনতার উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, এই ঘটনায় আমরা তৎপর রয়েছি। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। পরবর্তিতে যাতে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে তার জন্য তিনি সবাইকে সজাগ থাকার জন্য আহবান জানান।