সরকারি খাল দখল করে ভবন বানাচ্ছেন পৌর মেয়র

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১; সময়: ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ |
সরকারি খাল দখল করে ভবন বানাচ্ছেন পৌর মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভায় সরকারি খালের ওপর অবৈধভাবে ‍দুইটি ভবন নির্মাণ করছেন মেয়র আব্বাস আলী। গত এপ্রিলে খাল দখল করে ভবন দুইটি নির্মাণ কাজ শুরু করেন তিনি। তবে নির্মাণাধীন দুই ভবনের কাজ শনিবার সকাল থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, ভূমি অফিসের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য তিনি অনুমতির জন্য আবেদন করবেন। এ বিষয়ে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি।

তবে শনিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পৌরসভার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের দক্ষিণ দিকে একটি রাস্তার কাজ চলছে। এ কারণেও ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, মেয়র তাকে শুক্রবার ফোন দিয়ে জানিয়েছেন অনুমতির জন্য আবেদন করবেন। তার আবেদন পেলে দেখবেন, সরকারি খালের ওপর এটা আসলে করা যাবে কিনা। সকাল থেকে ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে বলেও তিনি জানান।

জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরখানেক আগে এই খাল বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনঃখনন করে। সরকারি এই খালের ওপর গত এপ্রিলের দিকে কাটাখালী মেয়র ভবন নির্মাণ শুরু করেন। ১৯ জুলাই একতলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন করা হয়।

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে সরকারি খালের ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে খালের ওপর প্রায় ১ হাজার ১৪৪ বর্গফুট জায়গাজুড়ে একটি তিনতলা ভবন নির্মাণ শুরু হয়। এখানে ইতিমধ্যে দুইতলা ভবন উঠে গেছে। এই ভবন তিনতলা হবে। ভবনের দোকান হবে ২১টি।

অন্যদিকে ব্রিজের উত্তর পাশে খালের ওপর আরেকটি ভবনের দুই তলা উঠে গেছে। এ ভবনে দোকান হবে মোট ছয়টি।

সরকারি খালের ওপর ভবন নির্মাণের অভিযোগ করেন পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর। এ অভিযোগের ভিত্তিতে গত আগস্ট মাসে পবা উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় মেয়রকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয় ভূমি অফিস। পরে কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকলেও এখন জোরেশোরে চলেছে নির্মাণকাজ।

খালের ওপর ভবন নির্মাণ নিয়ে কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী বলেন, খালটা দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা আটকে এক রকম ভরাটই ছিল। ফলে এই খালের আশপাশে অনেক ব্যবসায়ী অনেক বছর ধরে দোকানপাট চালিয়েছেন। বিএমডি যখন খাল খনন করতে আসে, তখন এই মানুষগুলো বাধা দিতে থাকে।

তখন বিএমডি, পৌরসভা মেয়রের সঙ্গে আলোচনা হয় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে। সেই পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে দুই পাশে পরিকল্পিতভাবে দুটি তিনতলা ভবনের কাজ চলছে। এই দোকানগুলো সঠিক নিয়মে টেন্ডার ডেকে ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হবে এবং পৌরসভা কর্তৃপক্ষ একটা বেঁধে দেওয়া দোকান ভাড়াও ঠিক করবে। এতে পৌরসভার জন্য আয়ের একটি উৎসও হবে।

মেয়র আরও বলেন, এ বিষয়ে এখনো ভূমি অফিস থেকে অনুমতি নেননি। অনুমতি না নিয়েই তিনি এটা করছেন একেবারে জনস্বার্থে। তবে এটা সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে