বাগমারায় স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে চলেছেন অনার্স পড়ুয়া আশরাফুল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১; সময়: ৪:০৫ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে চলেছেন অনার্স পড়ুয়া আশরাফুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে চলেছে আশরাফুল ইসলামের খামারে হাঁসের সংখ্যা। ছোট থেকেই স্বপ্ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরী করবেন। সেটা আর হয়ে উঠেনি।

স্কুল-কলেজ পেরিয়ে এখন অনার্স ৩য় বর্ষে পড়াশোনা করছেন আশরাফুল ইসলাম। কলেজে যাওয়া-আসার পথে প্রায় চোখে পড়ে মোহনপুর এলাকার কেশরহাটে বিলের মধ্যে রাস্তার ধারে হাঁসের খামার। মনে মনে বাঁধতে থাকেন হাঁসের খামার তৈরির স্বপ্ন।

আশরাফুল ইসলাম মোহনপুর সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ১ম বর্ষে লেখাপড়া অবস্থাতে ১শত কেম্বেল হাঁসের ছোট খামার তৈরি করেন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। হাতে কলমে হাঁস পালনের সেই শিক্ষাই বড় খামার তৈরির পথ প্রদর্শক। বর্তমানে আশরাফুল ইসলামের খামারে কেম্বেল হাঁস রয়েছে ১ হাজার ১টি হাঁস।

ক্ষুদ্র এই উদ্যোক্তার বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের বুজরুক কোলা গ্রামে। তার পিতার নাম সিদ্দিক আলী। সে পেশায় একজন কৃষক। কৃষিকাজ করেই চলে তাদের সংসার। বাড়ির পাশে বিল হওয়ায় হাঁস পালনে সহায়তা হচ্ছে। বিলে ছেড়ে দিয়ে খাওয়ানোর ফলে অতিরিক্ত খাবারের উপরে চাপ কমেছে।

ডিম দিতে শুরু করেছে দুই থেকে আড়াই শত হাঁস। দামও ভালো। প্রতিটি ডিম খামার থেকে বিক্রয় করা হচ্ছে ১০ টাকা ৪০ পয়সায়। তবে হাঁসের খাবারের দাম বেশি হওয়ায় বর্তমানে খরচ একটু বেশি হচ্ছে। ডিমের পরিমান বৃদ্ধি পেলে লাভের মুখ দেখবে আশরাফুল ইসলাম।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত মার্চ মাসে জয়পুরহাট থেকে এক দিন বয়সী কেম্বেল হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করি। প্রতিটি বাচ্চার দাম দিতে হয়েছে ৩২ টাকা। হাঁসের বয়স ৫ মাস হওয়ার পর থেকে ডিম দেয়া আরম্ভ করেছে। যতো দিন যাবে ডিম দেয়া হাঁসের সংখ্যা বাড়বে। বর্তমানে খামারের হাঁসকে শামুক এবং ধান খাওয়ানো হচ্ছে। এর আগে সান্তাহার আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার থেকে ১০০টি হাঁসের বাচ্চা কিনেছিলেন আশরাফুল ইসলাম।

মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় হাঁসের খামারেই মনযোগ দিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম। প্রতিদিন হাঁসগুলোকে বিলে চরাতে নিয়ে যাওয়া। সময় মতো তাদের খাবার দেয়া। খামারে উঠানো সহ যে সকল কাজ করতে হয় তাতে সহযোগিতা করেন আশরাফুল ইসলামের মা-বাবা। তাদের কারনে এখন পর্যন্ত কোন শ্রমিক রাখতে হয়নি হাঁসের খামারে।

শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে হাঁসের খামারে। হাঁসের এই খামার থেকে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম। উপজেলা জুড়ে বর্তমানে এটিই হাঁসের বড় খামার বলে জানাগেছে। এছাড়াও ১ থেকে ৩ শত হাঁসের অনেক খামার রয়েছে বাগমারায়। হাঁসের কোন রোগ ব্যাধি হলে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হয়। হাঁসের বড় খামারে করতে গেলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। স্বল্পসুদে ঋণ পেলে খামারে হাঁসের সংখ্যা আরো বাড়াতে পারবে বলে জানিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এস.এম. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক সহ খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছি। সেই সাথে খামারীদের সাথে সর্বদায় যোগাযোগ রাখা হয়। কোন সমস্যা হলে খামারীরা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগযোগ করেন। সে মোতাবেক দ্রুত খামারীদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে