মোহনপুরের অবহেলিত রাস্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মোল্লাডাঙ্গী গ্রামের একমাত্র চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ গ্রামের জনবসতির সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। এক যুগ আগে গ্রামের ৯৫ ভাগ মানুষ ছিল দারিদ্রসীমার নিচে। পেশা ছিল মিঠা পানির মাছ শিকার এবং পশু পালন। অভাব অনটন লেগেই থাকতো বেশিরভাগ পরিবারেই। বর্ষাকালে কর্মহীন মানুষগুলো মাছ শিকার করে বাজারে বিক্রি করেই সংসার চালাতো। অনেকেই আবার ফাঁকা মাঠে চরাতো গরু ছাগল।
এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলতো তাদের সংসার। এরপর কালের বিবর্তনে বিল খালে পুকুর খননের জন্য বন্ধ হয় তাদের মাছ শিকার। পরবর্তীতে ফসলের মাঠ জুড়ে পুকুর দিঘি খননের ফলে হারিয়ে যায় পশু পালনের সুযোগ।
এ কারণে আদি পেশা পরিবর্তন করেছেন অনেক মানুষ। খুঁজতে থাকে নতুন কর্মসংস্থান। এভাবেই চলতে চলতে গ্রামবাসী ঝুঁকে পড়েন পান ও সবজি চাষে। এখান থেকেই থাকে তাদের উন্নয়নের চাকা।
অন্যদিকে সামাজিক অনুষ্ঠান হিসেবে আলকাপ, শরিয়ত-মারিফত, কেচ্ছা গানের পাশাপাশি মহরম চাঁন্দে খেলতো লাঠি খেলা। আর তাদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে একটি মাত্র কাঁচা রাস্তা। সড়কটি মোল্লাডাঙ্গি সড়ক হিসেবেই পরিচিত।
সড়কটি কেশরহাট-ভবানীগঞ্জ সড়কের মগরার মোড় হতে মোল্লাডাঙ্গি গ্রামের ভেতর দিয়ে খাঁড়তা গ্রামে প্রবেশ করেছে। সড়কটি বছরজুড়েই চলাচলের অযোগ্য থাকে বলে জানিয়েছে গ্রামবাসী।
সড়কটির বর্তমান রূপ দেখে মনে হবে এগ্রামের মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন গরুর গাড়ি। সারা সড়কজুড়ে হাঁটু পানি। ছোট খাটো যানবাহন চলাচল তো দুরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচলও দুরূহ হয়ে পড়েছে।
অসতর্কাবস্থায় পা পিছলে পড়তে হবে সড়কের নিচে- অন্তত ১০ ফিট গভীর খালে। এরই মধ্যে এখানকার মানুষ কখনো কাঁধে, কখনো মাথায় বোঝায় টেনে বাজারজাত করে থাকে সবজিসহ সব ধরনের উৎপাদিত ফসল।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, মোল্লাডাঙ্গি সড়কটি যুগ যুগ ধরে পাকাকরণের প্রতিশ্রুতি পেলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। গ্রামবাসী দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণ চায়। মাত্র দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি পাকা হলেই গ্রামবাসীর জীবন বৈচিত্র।
গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, মোল্লাডাঙ্গি এক সময়ের অবহেলিত এবং গরিব একটি গ্রাম। গ্রামের মানুষ পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। এখন ঘরে ঘরে সুখের হাঁসি। তবে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি কাঁচা থাকার কারণে চরম দূর্ভোগে দিন কাটায় গ্রামবাসী। রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য অসংখ্যবার প্রতিশ্রুতি পেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট মোল্লাডাঙ্গি সকড় পাকাকরণের দাবী জানান তিনি।
ওই গ্রামের আলতাফ হোসেন মাতুব্বর জানিয়েছেন, বর্তমানে রাস্তাটি ওই গ্রামের মানুষের প্রধান সমস্যা। ঘরে ঘরে পর্যাপ্ত ভাতের ব্যবস্থা থাকলেও রাস্তার জন্য নাই স্বস্তি। এখন বর্ষাকাল মানুষ চলাচল তো দূরের কথা গরুর গাড়িও চলতে পারবে না এই সড়কে। দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণ করে জনদুর্ভোগরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
জাহানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমাজ উদ্দিন খাঁন জানান, আসলেই রাস্তাটি পাকাকরণ জরুরি। সরকারি অর্থ পেলেই পাকাকরণ কাজ শুরু করা যাবে।
127