রাজশাহীতে ২৪ ঘন্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২১; সময়: ১০:২০ পূর্বাহ্ণ |

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও আটজন। সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গেল ২৪ ঘন্টায় করোনা ইউনিটে এই ১৫ জনের মৃত্যু হয়।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, এক দিনে মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজশাহীর ছয়জন, নাটোরের একজন, নওগাঁর দুইজন, পাবনার পাঁচজন ও কুষ্টিয়ার একজন।

এদের মধ্যে নয়জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। যাদের আটজনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে তিনজন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে দুইজন।

শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে নতুন রোগি ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন। একই সময় সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫৯ জন। সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩ বেডের বিপরীতে ভর্তি আছে ৩৯৯ জন। এদের মধ্যে আইসিইউতে রয়েছে ২০ জন।

করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগিদের মধ্যে ১৭৪ জনের করোনা পজেটিভ রয়েছে। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছে ১৪৬ জন; যাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৭০ জন।

উঠানামা করছে সংক্রমণ

হাসপাতাল পরিচালক জানান, রাজশাহীতে উঠানামা করছে করোনা সংক্রমণের হার। রোববার দুইটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৩৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

যা আগের দিনের চেয়ে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। এর আগের দিন শনিবার ছিল ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ। এছাড়াও গত শুক্রবার ছিল ২৪ দশমিক ৩২ শতাংশ, গত বৃহস্পতিবার ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ, গত বুধবার ছিল ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ, গত মঙ্গলবার শনাক্তের হার ছিল ২২ দশমিক ৭৬ শতাংশ, গত সোমবার ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং গত রোববার ৩০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

চারটি প্যাথলজিক্যাল সেবা চালু

এখন থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সব পরীক্ষা হাসপাতালেই করা হবে বলে জানিয়ে শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে পৃথক চারটি প্যাথলজিক্যাল সেবা চালু করা হয়েছে। এখন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আর বাইরে যেতে হবে না।

শামীম ইয়াজদানী বলেন, ডি-ডাইমার, ডি-হাইড্রোজেনেস, সিআরপি, সিরাম ফেরিটিন পরীক্ষাগুলো হাসপাতালেই হবে। এই পরীক্ষাগুলো বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে অনেক টাকা নেয়। তাই হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য হাসপাতালেই এই সেবা শুরু হয়েছে।

পরিচালক বলেন, সরকার নির্ধারিত ৬০০ টাকায় ডি-ডাইমার, ২৫০ টাকায় সিরাম ফেরিটিন এবং ১৫০ টাকায় ডি-হাইড্রোজেনেস ও সিআরপি পরীক্ষা করা যাবে। পাশাপাশি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) রোগীদের আরও তিনটি পরীক্ষা একসঙ্গে ৬০০ টাকায় করা হবে। ইসিজির ব্যবস্থা আগে থেকেই ছিল। এর সঙ্গে এখন ট্রপোনিন আইও টেস্ট করা যাবে ৫০০ টাকায়। হাসপাতালের বাইরে এই পরীক্ষাগুলো করাতে করোনা রোগীদের গুনতে হতো চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

তিনি আরও বলেন, করোনা রোগীদের এই পরীক্ষাগুলো একাধিকবার করতে হয়। ফলে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে এর আগে অনেক রোগী পরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

হাসপাতালে প্যাথলজি টেকনিশিয়ান স্বল্পতা নিরসনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোক নেওয়ার কথা জানান শামীম ইয়াজদানী।

তিনি বলেন, বর্তমানে মোট ১১ জন জন টেকনিশিয়ানের মধ্যে ব্লাড ব্যাংকে পাঁচজন ও অন্য ছয়জন প্যাথলজিতে কাজ করেন। এই ছয়জন লোক নিয়ে কীভাবে ২৪ ঘণ্টা প্যাথলজি চালাব? এ জন্য আমরা পরিকল্পনা করেছি, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কিছু লোক নেব। এ জন্য হালকা কিছু সার্ভিস চার্জ নেওয়া হবে। এটা যদি করতে পারি, তাহলে চিকিৎসাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে।

  • 624
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে