রাজশাহীতে অবৈধ বালুকারবারিদের দাপটে কোনঠাসা বৈধ ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২১; সময়: ৩:১০ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে অবৈধ বালুকারবারিদের দাপটে কোনঠাসা বৈধ ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালুকারবার। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতায় একটি সিন্ডিকেট অবাধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। প্রশাসনের নাকের ডোগায় এই অবৈধ বালুকারবারে বেহাল অবস্থা সড়কগুলোর।

এছাড়াও তাদের দৌরাত্বে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী ও বালুমহালের বৈধ ইজারাদাররা। অবৈধ বালুকারবারের প্রতিবাদ করলে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন বৈধ বালুমহাল ইজারাদাররা।

এই অবৈধভাবে বালুকারবার বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে এলাকাবাসী। রোববার গোদাগাড়ী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে দেয়া স্মারকলিপিতে পৌরসভার তিনজন কাউন্সিলর আব্দুল জাব্বার, এমদাদুল হক ও জাহানারা বেগম ছাড়াও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-২ রবিউল আলম স্বাক্ষর করেছেন।

জানা গেছে, একটি সিন্ডিকেট গোদাগাড়ী উপজেলার জোতগোসাইদাস ও ভগবন্তপুর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, মজুদ এবং সেখান থেকে পরিবহন করছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আনারুল বিশ্বাস ও তার ছেলে রোমেন বিশ্বাস এই বালু সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু নেতা ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অবৈধ সুবিধার মাধ্যমে ম্যানেজ করে তারা অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে এই অবৈধ বালুকারবার। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসীসহ বালুমহালের বৈধ ইজারাদাররা।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, পদ্মা থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এতে ঝুকিপূর্ন অবস্থায় পড়েছে পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধ, মাদ্রাসা ও মসজিদ। এছাড়াও নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে তিনটি গ্রাম। এছাড়াও ভারি ট্রাক-লরি ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের কারণে এলাকার সড়কগুলো ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টায় বালু পরিবহনের কারণে এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া সড়কগুলো নষ্ট হয়ে বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে সরকারের।

গোদাগাড়ী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার বলেন, প্রশাসনের নাকের ডোগায় এই অবৈধ বালু কারবারে তারা অতিষ্ঠ। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। অবৈধ এই বালু কারবারের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ।

এদিকে, অবৈধ বালুকারবারে আর্থীকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে বালুমহালের ইজারাদাররা। গোদাগাড়ী উপজেলায় বালুমহাল রয়েছে দুইটি। যা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা দেয়া হয়েছে। প্রায় ১৩ কোটি টাকায় বালুমহাল দুইটি ইজারা নিয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসেন ও হাসিবুর রহমান নামের দুই বালু ব্যবসায়ী। এ উপজেলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বৈধ বালু ব্যবসায়ীরা।

বালুমহাল ইজারাদার জাহাঙ্গীর হোসেন ও হাসিবুর রহমান জানান, শুধু অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেই খান্ত নয় তারা। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমাদের বৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাধা সৃষ্টি ও নানাভাবে হয়রানি করছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছে তাদের ব্যবসা। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে ইজারার অর্ধেক অর্থ তোলা দায় হয়ে যাবে বলে জানান তারা।

  • 231
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে