আক্রান্ত ঝুঁকিতে রাজশাহীর গণমাধ্যমকর্মীরা

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২১; সময়: ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ |
আক্রান্ত ঝুঁকিতে রাজশাহীর গণমাধ্যমকর্মীরা

তারেক মাহমুদ : গত এক সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন রাজশাহীতে কর্মরত মোট ৯ গণমাধ্যমকর্মী। এরপরও অন্য গণমাধ্যমকর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এনিয়ে গণমাধ্যমকর্মী ও তাদের পরিবারের মধ্যে একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা গেছে, দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন গণমাধ্যমের রাজশাহীতে কর্মরত এ পর্যন্ত মোট ১৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমানে নয়জন সাংবাদিক নিজ বাড়ি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শুধু সাংবাদিক নয়, তাদের অনেকের সহধর্মিণীও আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

আক্রান্তরা হলেন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম ও তার সহধর্মিণী, রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মাইনুল হাসান জনি ও তার সহধর্মিণী, সময় টিভির রাজশাহী ব্যুরো চিফ সাইফুর রহমান রকি, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার গোলাম রাব্বানী, এটিএন নিউজের স্টাফ রিপোর্টার বুলবুল হাবিব ও তার সহধর্মিণী, সোনার দেশের ফটো সাংবাদিক আলী এহসান তুহিন, ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপার্সন মনিরুল ইসলাম, রাজশাহী সংবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক মীম ওবায়দুল্লাহও আর টিভির ক্যামেররাপার্সন সানু।

এর আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, মাছরাঙ্গা টিভির ক্যামেরাপার্সন মাহাফুজুর রহমান রুবেল, মোহনা টিভির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান মেহেদী হাসান শ্যামল, এসএ টিভির ক্যামেরাপার্সন আবু সাইদ, সময় টিভির রাজশাহী প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান রাজিব, বাংলার জনপদের সংবাদকর্মী মোস্তাফিজুর রহমান রকি, সানশাইনের নিজস্ব প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান নূর। রাজশাহীর সিনিয়র সাংবাদিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, কাজের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন ও চলাচল করছেন, তারাই বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন। আর সেখান থেকেই পরিবারে ছড়িয়ে পড়ছে। যেহেতু সাংবাদিকরা হাসপাতাল ও বাইরে গিয়ে মানুষের মাঝে খুব কাছাকাছি থেকে কাজ করেছেন।

সে কারণে এই কমিউনিটিতে এটাতে তারা দ্রুত  সংক্রমিত হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করলেও করোনায় সবচেয়ে বেশি সময় সাংবাদিকরা বাইরে কাজ করছে। অন্য পেশাজীবি মানুষের যেমন ডিউটি ভাগ করে কাজ করা হয়। সাংবাকিদরে ক্ষেত্রে তেমনটি নয়। তারা জানাচ্ছেন  সকল গণমাধ্যামের কর্মীদের সবসময় সকল ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে হয়। ২৪ ঘণ্টায় মাঠে থেকে কাজ করছে সংবাদকর্মীরা। অন্যদিকে মাঠে কাজ করতে গণমাধ্যাম কর্মীদের বেশিরভাগ হাউজগুলো সুরক্ষা সামগ্রী দিচ্ছে না। এখন সকল হাউজগুলোকে সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে কাজে পাঠানোর বিষয়ে জানাচ্ছেন তারা। এদিকে গতকয়েক সপ্তাহ থেকে রাজশাহীতে করোনার সংক্রামণ ও মৃত্যু বেশি হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকিতে কাজ করছে সংবাদকর্মীরা।

স্বাভাবিকের চেয়ে বর্তমানে বেশিরভাগ হাউজের গণমাধ্যম কর্মীরা হাসপাতালের ভেতরে ও সামনে গিয়ে কাজ করেছে। সংক্রামিত করোনা রোগীদের সার্বিক বিষয়ে দেখতে অনেক সময় করোনা ওয়ার্ডে গিয়েও কাজ করেছে সংবাদকর্মীরা। তাদের সাথে সাথে সংক্রামিত হয়েছে পরিবারের সদস্যরাও। অনেকে হাউজের চাপ বেশি থাকায় চাকরি বাঁচানোর জন্য এখন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে তারা।

প্রবীণ সাংবাদিক ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান জানান, সাংবাদিকদের প্রতিকূল অবস্থা মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে। এটা মেনেই আমরা সাংবাদিকতায় এসেছি। এখন সংক্রামণ বেশি ! তাই প্রতিটি হাউজকে সংবাদকর্মীদের সুরক্ষাসামগ্রী দিয়ে কাজে পাঠাতে হবে। যারা টিকা পায়নি বা নেয়নি তারা যেন এবার টিকা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।

  • 158
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে