লকডাউন: বিকেলের পর নিস্তব্ধ নগরী

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২১; সময়: ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ |
লকডাউন: বিকেলের পর নিস্তব্ধ নগরী

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বিতীয় ধাপে ঘোষণাকৃত আরো একসপ্তাহের কঠোর লকডাউের প্রথম দিন পালিত হয়েছে। দিনের বেলা লকডাউনে কিছুটা শিথিলতা দেখা গেলেও বিকেলের পর নগরজুড়ে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। অন্যান্য দিনের চেয়ে এদিন পরিবহণ কিছুটা বেশি চলাচল করতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে নগরীর রাস্তাঘাটেও মানুষের চলাচল বেশি ছিলো। এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশের তৎপরতা থাকলেও নগরীর ভেতরের রাস্তাগুলোতে আড্ডা জমতে দেখা গেছে। যদিও বিকেলে পর নগরী প্রায় ফাঁকাই ছিলো।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে শপিংমল ও মার্কেট বন্ধ রয়েছে। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কৌশলে নির্দেশনার আওতার মধ্যে থাকা দোকানিদের ব্যবসা করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ অর্ধসাটারেও দোকান খুলেছিলেন। তবে পুলিশের টহল ও ক্রেতা না থাকায় দুপুরের পর এসব দোকানও বন্ধ হয়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর কাঁচাবাজার অনেকটাই জমজমাট থাকছে। কাঁচাবাজারে সঠিকভাবে মাস্ক না পরেই অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা কেনাবেচা করছেন।

নগরীর প্রায় প্রতিটি মোড়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে তারা যাতায়াতকারী পরিবহণগুলোকে আটকেছেন, চালক ও যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। মাস্ক না থাকলে বা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে এসেছেন এটা প্রমাণে ব্যর্থ হলেই তাদেরকে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার কখনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। নগরীর প্রবেশপথগুলোতে বাড়তি নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় অবস্থিত চেকপোস্টে পুলিশের বাড়তি তৎপরতা দেখা গেছে। রোগি ও পণ্যপরিবহনের গাড়ি ছাড়া এই প্রবেশপথ দিয়ে অন্য কোনো গাড়ি নগরীতে ঠুকতে দেয়া হচ্ছে না।

এরমধ্যেও ভেতরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে নগরীতে কিছু গাড়ি ঢুকতে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ গাড়িকেই ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। এমন অবস্থা নগরীর মোড়গুলোতেও। নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকা থেকে গাড়ি কোর্ট স্টেশন এলাকা পর্যন্ত আসতে পারছেন। মোড় থেকে পুলিশ গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে। চালক সেখানে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছেন। যাত্রীরা কিছু দূর হেঁটে আবার গাড়ি নিচ্ছেন। সামনে মোড়ে আবার নামিয়ে দিচ্ছে। মোড় পেরিয়ে আবার মিলছে গাড়ি। এভাবে মোড়গুলো হেঁটে পার হয়ে গাড়ি পরিবর্তন করেই অসুস্থ রোগির গাড়ি, রিজার্ভ গাড়ি ও ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া অন্য জরুরি প্রয়োজনের মানুষগুলো চলাফেরা করছে। আর এক্ষেত্রে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।

নগরীর কোর্ট বাইপাস এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন সুলতানা বেগম। তিনি জানান, নগরীতে অটো রিকশা ছাড়া অন্য গাড়ি খুবই কম চলছে। যে দু’একটা গাড়ি চলছে তাদের মোড় পার হতে দেয়া হচ্ছে না। এতে গাড়ি পরিবর্তন করে করে চলাচল করতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, তিনি নগরীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অফিস সহায়কের কাজ করেন। তিনি প্রায় প্রতিদিনিই নগরীতে যাতায়াত করেন। করোনাকালে কিছু ভোগান্তির সঙ্গে খরচটা বেড়েছে।

রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল হক জানান, রাজশাহীতে করোনার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ রোধে দ্বিতীয় দফায় আবারও লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। মানুষকে সুরক্ষিত রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর কঠোরভাবেই লকডাউন বাস্তবায়ন হচ্ছে। এক্ষেত্রে জরুরি সেবা ছাড়া সকলকেই ঘরে থাকতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। আর জরুরি প্রয়োজনে বাইরে এসে মানুষ যেন কোনো ভোগান্তির শিকার না হন এবিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে অপ্রয়োজনে বাইরে আড্ডা জমালে প্রয়োজনে জেল জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

  • 278
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে