গোদাগাড়ীতে শ্রমিকদের কষ্টের টাকায় ভাগ বসাচ্ছেন মেম্বাররা

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২১; সময়: ৮:০৭ অপরাহ্ণ |
গোদাগাড়ীতে শ্রমিকদের কষ্টের টাকায় ভাগ বসাচ্ছেন মেম্বাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৪০ দিনের প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, শ্রমিকদের কষ্টের টাকায় ভাগ বসাচ্ছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা।

উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে অতি-দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি কাজ চলছে। ইউনিয়নের দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান (ইজিপিপি) কর্মসূচির কাজে অতি দরিদ্রদের অর্ন্তভুক্ত করার নিয়ম রয়েছে। ইউনিয়নের মেম্বাররা এই প্রকল্পের জন্য শ্রমিকদের তালিকা করে থাকেন।

উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে জমাকৃত তালিকাতে ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে। তালিকায় অর্ন্তভূক্ত বেশির ভাগ শ্রমিক কাজে না করেই প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোদাগাড়ী ইউনিয়নের কয়েকজন শ্রমিক জানান, যারা কাজে আসেন না ওই সব শ্রমিকদের কাছে ৬০ ভাগ টাকা মেম্বাররা আদায় করে থাকেন। আর যেসব শ্রমিকের হাজিরা কম থাকে তাদের কাছ থেকে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ টাকা আদায় করেন। এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র গোদাগাড়ী ইউনিয়নে বেশি।

বুধবার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক গোদাগাড়ী শাখায় টাকা উত্তোলন করে মেম্বারদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিতে হয়েছে শ্রমিকদের। গোদাগাড়ী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মালেক ও ২ নং ওয়ার্ডের তরিকুর ইসলাম শ্রমিকদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী টাকা আদায় করেন। এ সময় এক আদিবাসী নারী শ্রমিক টাকা দিতে না চাইলে মেম্বার ও শ্রমিক নির্দশির মধ্যে তর্ক-বির্তক হয়।

নির্দশি বলেন, আমি ৪০ দিনই কাজ করেছি। অথচ আমাকে অনুপস্থিত থাকার কথা বলে ১ হাজার ৬০০ টাকা দাবি করেন ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য তরিকুর ইসলাম।

নাম প্রকাশ করে আরো কয়েকজন শ্রমিক জানান, প্রত্যক শ্রমিকের আলাদা আলাদা হিসাব নাম্বার রয়েছে। টাকা উত্তোলনের পর অর্ধেক টাকা মেম্বারকে দিতে হয়। আর টাকা না দিলে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও প্রকল্পের কাজ বাদ দেয়া হয়।

 টাকা আদায়ের সময় সাংবাদিকের দেখে দুই মেম্বার সটকে গেলেও টাকা নেওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে। গোদাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, অফিস ম্যানেজ করার জন্য শ্রমিকদের কাছ থেকে মেম্বাররা কিছু টাকা নিয়ে থাকেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা (পিআইও) প্রকৌশলী আবু বাশির বলেন, প্রকল্পে কাজের অর্ন্তভূক্ত শ্রমিকদের নিয়মিত কাজ করতে হয়। কাজে অনুস্থিত পাওয়া গেলে প্রকল্প থেকে ওই শ্রমিক বাদ পড়বেন। টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই। মেম্বারদের টাকা নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

  • 348
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে