রাজশাহীতে লাশ বুঝে নিলেন শোকাহত স্বজনরা
নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা শেষ হয়েছে। শনিবার ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমাগার থেকে অপেক্ষারত শোকে হতবিম্বল স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এসময় তারা সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী মহানগরীর অদূরে কাটাখালীতে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর অগ্নিকাণ্ডে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ২৬ মার্চ শুক্রবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে কাটাখালি থানার সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। ৪ টি পরিবারের ২ শিশু, ৪ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ একটি মাইক্রোবাসযোগে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিলেন।
পথে মাইক্রোবাসটি রাজশাহীর কাটাখালি থানার সামনে পৌঁছালে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সাথে সাথে মাইক্রোবাসটিতে আগুন ধরে যায়। এতে মাইক্রোবাসের ভিতরে থাকা ১৮ জন যাত্রীর মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। আহত ৮ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে আরো ৬ জনের মৃত্যু হয়। এখনো ১ জন গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। নিহতরা সবাই রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তারা রাজশাহীতে একটি পার্কে পিকনিক করতে আসছিলেন। একজন বেঁচে থাকায় মাইক্রোবাসে চালকসহ মোট ১৮ জন ছিলেন।
এই দুর্ঘটনায় ১৮ জনের এদের মধ্যে বেঁচে আছেন শুধু পাভেল (২৭) নামে একজন। তিনি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। দুর্ঘটনায় তার বাবা মোখলেসুর রহমান (৪৫) ও মা পারভীন বেগম (৪০) নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি পীরগঞ্জের ডারিকাপাড়া গ্রামে।
এছাড়া নিহত হয়েছেন পীরগঞ্জের রাঙ্গামাটি গ্রামের মো. সালাহউদ্দিন (৩৬), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার (২৫), তাদের ছেলে সাজিদ (৮), মেয়ে সাফা (২), শামসুন্নাহারের বড় বোন কামরুন্নাহার (৩৭), উপজেলা সদরের মো. ভুট্টু (৪০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (৪০), ছেলে ইয়ামিন (১৫), বড় মজিদপুরের ফুলমিয়া (৪০), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫), ছেলে ফয়সাল (১৫) এবং মেয়ে সুমাইয়া (৮), সাবিহা (৩), দুরামিঠিপুরের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম (৪৬) এবং মাইক্রোবাসের চালক মো. হানিফ (৩০)। হানিফের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার পঁচাকান্দ গ্রামে।
সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আবু আসলামকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। তিনি বলেন, তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিলে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে বলা যাবে। আর সরকারি খরচে মরদেহগুলো পৌঁছে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল।
145