রাজশাহী নগরে কাউন্সিলরের অবৈধ বালু কারবার অব্যাহত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২১; সময়: ৩:৫০ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী নগরে কাউন্সিলরের অবৈধ বালু কারবার অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে ইজারাকৃত বালুমহালের বাইরে গিয়ে অবৈধভাভে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। মধ্য শহরের তালাইমারি এলাকার পদ্মায় বালু উত্তোলন করছেন নগরীর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এক আওয়ামী লীগ নেতা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রজব আলী বালু তোলতে মধ্য নগরী তালাইমারী এলাকায় পদ্মার বুকে অবৈধভাবে রাস্তাও নির্মাণ করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে চারটি ড্রেজার দিয়ে বালু তুলতে দেখা গেছে।

ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী এই বছর রাজশাহীর ‘দিয়াড়খিদিরপুর’ ও ‘চরশ্যামপুর’ বালুমহাল ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু তিনি বালু উত্তোলন করছেন ইজারা নেওয়া বালুমহালের ৬/৭ কিলোমিটার দূরে তালাইমারি এলাকায় কাজলা মৌজায়। ড্রেজিং মেশিন দিয়ে সেখনে বালু তোলার কাজ শুরু করেছে। এ আগে গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহের দিকে সেখানে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ও পদ্মার বুকে রাস্তা নির্মাণ কাজ করেন এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তা সরিয়ে নেয়।

শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহী নগরের তালাইমারী ঘাট থেকে খানিকটা দূরে পদ্মা নদীর চর জেগেছে। ওই চরের পর (দক্ষিণে) নদীর মূল ধারা প্রবাহিত। ওই চরে ড্রেজিং করে বালু মজুদ করা হচ্ছে। সেখান থেকে সরাসরি ট্রাকে করে বালু আনতেই নদী ভরাট করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। রাস্তা তৈরি করতে ইট ও কংক্রিটের বর্জ্য ফেলা হয়। এছাড়াও ইজারার শর্তে পদ্মার পাড় থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে বালু উত্তোলন ও মজদু করার নিয়ম থাকলেও সেটিও মানা হয়নি।

রাজশাহী পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, গত বছর একইভাবে নদী ভরাট করে রাস্তা করা হয়েছিল। ওই সময় পরিবেশবাদীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হন। এছাড়া স্থানীয় এক ব্যক্তির করা রিটে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসন পদ্মার বুকে রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছিল। একই সঙ্গে ইজারাদারকে রাস্তা অপসারণ করে নিতে বাধ্য করে। হাইকোর্টের সেই আদেশ এখনো বলাবদ রয়েছে। কিন্তু হাইকোর্টের সেই আদেশ অমান্য করে আবারো পদ্মার বুকে ইট ও কংক্রিটের বর্জ্য ফেলে রাস্তা তৈরী করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পদ্মার বুকে ইট ও কংক্রিটের বর্জ্য ফেলে রাস্তা তৈরীর ফলে শহরের তীর ঘেঁষে যে জলাধার আছে সেটি থাকবে না। পুরোটা চর পরে যাবে। এতে শহরের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। এছাড়াও বিনোদনের জন্য লোকজন আর পদ্মা পাড়ে যেতে পারবে না। ধুলা-বালিতে ওই এলাকার পরিবেশ বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়বে।

বালু মহালের ইজারাদার ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী বলেন, হাইকোট থেকে যে কোন স্থান থেকে বালু তোলা ও পরিবহনের আদেশ পেয়েছি। সেই আদেশ বলে তালাইমারি এলাকায় বালু উত্তোলন ও পরিবহনের জন্য এই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এখনো কোন অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবি এই জনপ্রতিনিধির।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, তালাইমারি এলাকায় বালু তোলা হচ্ছে না বলে ইজারাদার জানিয়েছে। সেখানে বালু আনলোড করছে। তার পরও কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে সেটি খতিয়ে দেখা হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাজশাহীতে পাঁচটি বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়। এর মধ্যে পবা উপজেলায় একটি, গোদাগাড়ীতে দুইটি, চারঘাটে একটি ও বাঘায় একটি বালুমহাল।

  • 135
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে