দূর্গাপুরে পুকুর খনন নিয়ে দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২০; সময়: ৩:২৭ পূর্বাহ্ণ |
দূর্গাপুরে পুকুর খনন নিয়ে দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, দুর্গাপুর : রাজশাহীর দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খনন নিয়ে পুকুর মালিকদের সাথে কৃষকের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের দাওকান্দি গ্রামের নামু পাড়া বিলে এ ঘটনা ঘটে। পরে থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। ওই ঘটনার পর সোমবার দুপুরে পারিলা ও তেকাটিয়াপাড়ার শতাধিক নারী পুরুষ অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এছাড়াও পুকুর খনন বন্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, প্রায় ৩বছর আগ থেকে দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের দাওকান্দি গ্রামের নামুপাড়া বিলে প্রায় ৮০বিঘা ফসলি জমি নষ্ট করে ৪টি পুকুর খনন শুরু করে হরিরামপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম সাবু। এরপর স্থানীয় কৃষকদের তোপের মুখে পুকুর খনন বন্ধ করে দেয় অধ্যক্ষ। পরে আবারও পুকুর খনের চেষ্টায় চালালে ৩বছরে ৮বার পুকুর খনন ভেস্তে দেয় উত্তেজিত কৃষকরা। এতে পুকুর খননের গাড়িও ভেঙে দেয় উত্তেজিত কৃষকরা।
গত ২-৩ দিন থেকে আগে বির্তক ওই জায়গায় আবারও পুকুর খননের উদ্দ্যেশে গাড়ি নামায় অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম সাবু। এতে স্থানীয় কৃষকরা প্রতিবাদ করলেও কাউরে কথা তোক্কা না করে পুকুর খনন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। গত রোববার বেলা ১২টার দিকে পারিলা ও তেকাটিয়া পাড়ার কৃষকরা একজোট হয়ে পুকুর খনন বন্ধে গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় পুকুর মালিক অধ্যক্ষ সাবু সহ তার লোকজনের সাথে প্রতিবাদ মূখর কৃষকদের সাথে দফায় দফায় লাঠিসোঠা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়। পরে আবারও অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

পারিলা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন ও জান বক্স বলেন, এই এলাকার কৃষকের অর্থনৈতিক ফসল পান। পানের উপর এ এলাকার মানুষের জীবিকা। ওই বিলে অধ্যক্ষের পুকুর হলে শত শত পানবরজ সহ ফসলি জমি পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। ফলে এ এলাকার কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য ওই পুকুর বন্ধে তারা প্রশাসনের সৃ দৃষ্টি কামণা করেছেন। তারা আরও বলেন, গত ৩ বছর ধরে ওই জায়গায় পুকুর খননের চেষ্টা চালাচ্ছেন অধ্যক্ষ সাবু। কিন্তু কৃষকদের তোপের মুখে ৮বার তাকে পিছু হটতে হয়েছে। প্রতিবারই কৃষকরা পুকুর খনন বন্ধ করে দিয়ে গাড়িও ভাঙচুর করে।

রোববার দুপুরে স্থানীয় কৃষকরা পুকুর খননের সময় গাড়িতে ভাঙচুর করার চেষ্টা চালায়। এ সময় দু পক্ষের লোকজন লাঠি সোঠা নিয়ে অবস্থান নেয়। হরিরামপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম সাবুর ব্যবহত ফোনে কল করা তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলী জানান, কৃষকরা লিখিত অভিযোগ করেছেন। পরে ওখানে পুকুর খনন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রোববার পুকুর খনন স্থলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ পাঠানো হয়ে ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেও জানান ওসি।

এদিকে, অধ্যক্ষ শাহাবুল ইসলাম ওরফে সাবুর অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে পারিলা ও তেকাটিয়া পাড়া গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা মানবন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ সময় তারা দ্রুত পুকুর খনন বন্ধ করতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামণা করেছেন। গত বছরে একই ভাবে পুকুর খনন করতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

  • 76
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে