লাইট হাউসের আয়োজনে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে এক হওয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২০; সময়: ৬:২৯ অপরাহ্ণ |
লাইট হাউসের আয়োজনে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে এক হওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক : লাইট হাউসের আয়োজনে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে এক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সোমবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় কক্সবাজার সার্কিট হাউস রোডে অরুণোদয় মিলনায়তনে সবা হয়।

দাতা সংস্থা অস্ট্রেলিয়া সরকার, ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউপিএইচএফ, ইউএনওমেন, ইউএনএফপিএ এর আর্থিক সহযোগিতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন লাইট হাউস’র আয়োজনে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে সক্রিয়তার ১৬ দিনের প্রচারণা উপলক্ষ্যে আলোচনা ও সংহতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে.কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ, এলডিএমসি, পিএসসি। কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান এর সভাপতিত্বে লাইট হাউস এর প্রধান নির্বাহী হারুন-অর-রশিদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য তুলে ধরেন।

জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে সক্রিয়তার ১৬ দিনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএন-উইমেন এর জেন্ডার এবং হিউম্যান অ্যাকশন কর্মসূচি বিশেষজ্ঞ মিসেস মেরি সোফি পিটারসন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন

ইউএনএইচসিআর এসজিবিভি অফিসার মিসেস টেরা ম্যাকিনন, ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি স্টেনলি, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত বিশ্বাস, কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি মাহবুবুর রহমান প্রমূখ।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধকল্পে ১৯৯৫ সালের বেইজিং ঘোষণা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন, বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক নির্যাতনমুক্ত সমাজ গঠণে সরকার দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

একজন নারীও যেন নির্যাতনের স্বীকার না হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৬ দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক কর্মসূচি ও জাতীয় সংলাপ সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলেও মনে করেন।

তিনি আরো বলেন, নারীদের চলার পথ মসৃণ এবং স্বাধীনভাবে চলাফেরা নিশ্চিত করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবেনা। টেকসই উন্নয়ন ও সরকারের গৃহিত উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে না পারলে আমাদের সকল অর্জনই বৃথা হয়ে যাবে। তাই সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। নারীর উন্নয়নই বাংলাকে নিয়ে যাবে বহুদূর।

জাতিসংঘের মহাসচিব এ বছর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন দিবস পালনের প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে নির্বাচন করেছেন অরেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড: ইউনাইট টু অ্যান্ড ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড গার্লস। বাংলায় বলা যায়, বিশ্বকে কমলায় রাঙাও: নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে এক হও।

কমলা রঙের বিশ্বে নারী, বাধার পথ দেবেই পাড়ি চিন্তা মাথায় নিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তারা আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসের কার্যক্রমকে ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর (বিশ্ব মানবাধিকার দিবস) এই ১৬ দিনব্যাপী বিস্তৃৃত করা হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে নারী নির্যাতন নির্মূলকল্পে রাষ্ট্র, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও ব্যক্তি পর্যায়ে অঙ্গীকার ও কার্যক্রমকে দৃশ্যমান এবং সক্রিয় করতে আহ্বান জানান। যাতে এ ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সাড়া জাগানো প্রচারণা ও সচেতনতা সৃষ্টি হয়।

১৬দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৮ নভেম্বর ২০২০ টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রচারাভিযান ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.সাইফুল ইসলাম অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এবং প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। ২৯ নভেম্বর ২০২০ উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.নিজাম উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য তুলে ধরেন লাইট হাউস প্রধান নির্বাহী মো. হারুন অর রশিদ। পাশাপাশি প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে সুসজ্জিত পিকআপ ভ্যানের মাধ্যমে টেকনাফ ও উখিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মাইকিং ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

জাতিসংঘের মহাসচিবের আহ্বান অনুযায়ী দেশের বিশেষ স্থাপনাসমূহে কমলা রঙের পতাকা উত্তোলন, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ ও ব্যক্তি নাগরিক পর্যায়ে, বিশেষত মিডিয়ার পক্ষ থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসনের পক্ষে জন উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে বলে সভায় তুলে ধরা হয়।

সরকারের পুনঃ অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে সব লিঙ্গ বৈষম্যমূলক আইনের সংস্কার, সিডও সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে বিদ্যমান আইনসমূহের যথাযথ প্রয়োগ ও দ্রুত বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকেও উদ্বুদ্ধ করতে হবে যাতে করে দেশে নারী নির্যাতনের প্রতি জিরো টলারেন্সের মনোভাব সৃষ্টি হয়।

 

  • 5
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে