রাজশাহীর দুর্গম চরে হবে পুলিশ ফাঁড়ি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২০; সময়: ১১:০৪ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীর দুর্গম চরে হবে পুলিশ ফাঁড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর পবা উপজেলার একটি দুর্গম চরের নাম মাজারদিয়া। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) আওতায় হলেও এলাকাটি পদ্মা নদীর ওপারে। মামলা-মোকদ্দমার তদন্ত ছাড়া চরটিতে আগে পুলিশের পা পড়ত না। এখন চিত্র পাল্টেছে। বেড়েছে পুলিশের যাতায়াত। এই চরে এবার পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের ঘোষণা এসেছে।

আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক মঙ্গলবার স্থানীয়দের দাবির মুখে এ ঘোষণা দেন। এ দিন বিকালে তিনি বিট পুলিশিং সভায় যোগ দিতে পদ্মা পাড়ি দিয়ে স্বশরীরে ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া ওই চরে যান। তিনি একা নন, আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ছাড়াও আরও ১১ জন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) চরটিতে যান। চর মাজারদিয়ার নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সে সভায় বক্তব্য শেষেই চরটিতে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। চর মাজারদিয়ায় পুলিশ ফাঁড়ি হলে রাজশাহীতে এটিই হবে কোন চর এলাকায় প্রথম পুলিশ ফাঁড়ি। চর মাজারদিয়াড় রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড। এখানে প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস। চরটি রাজশাহী শহরের ওপারে।

বিট পুলিশিং সভায় এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন কুড়ান বলেন, মামলার তদন্ত ছাড়া আগে এই চরে পুলিশ আসত না। ফলে মাদক চোরাচালান বেড়েছিল। এখন সেটি অনেকটাই কমেছে। আমরা এখন এই চরে পুলিশ ফাঁড়ি চাই। হরিপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শামিম হোসেন একই দাবি তুলে বলেন, ছোট-খাট বিষয় নিয়ে আমরা নদী পার হয়ে থানায় যেতে চাই না। এখানেই যেন সমাধান হয় তার জন্য পুলিশ ফাঁড়ি চাই।

হরিপুর ইউপির চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল বলেন, সীমান্ত ঘেঁষা এই চরে আগে প্রচুর মাদক চোরাচালান হতো। এখন কমেছে। কিন্তু বদনাম রয়ে গেছে। আমরা এই চরকে মাদকমুক্ত করতে চাই। সে জন্য একটা পুলিশ ফাঁড়ির দরকার। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সেটি চাই।

এসব দাবির প্রেক্ষিতে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, আমি ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনারকে বলে দিয়েছি। জায়গা খোঁজা শুরু হবে। জায়গা পাওয়া গেলেই পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, আমি আপনাদের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে চাই। আরএমপির অন্য এলাকার মানুষ যে সুবিধা পায়, একই সুবিধা চরের মানুষও পাবে। কিন্তু আপনাদের মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বয়কট করতে হবে। আমরা মাদক কারবারিকে ছাড় দেব না।

পুলিশ কমিশনার বলেন, নতুন করে কেউ মাদকে জড়াবেন না। যাদের সম্পৃক্ততা আছে তারা দূরে সরে আসুন। মাদক ব্যবসা করে একজনের লাভের জন্য রাষ্ট্রকে ধ্বংস করবেন না। চরে পাকা রাস্তা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, সন্তানদের ভাল পড়াশোনার ব্যবস্থাসহ সব সুবিধা তৈরি করব। চরের মাটি সোনার মাটি। ভাল ফসল আবাদ হয়। দয়া করে আপনারা মাদকের সঙ্গে কেউ জড়াবেন না।

এ সময় উপস্থিত জনতা হাত তুলে কথা দেন তারা মাদকের সঙ্গে জড়াবেন না। সভায় অন্যদের মধ্যে আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) সুজায়েত ইসলাম, উপ-কমিশনার রশীদুল হাসান, সাজিদ হোসেন, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন কাশিয়াডাঙ্গা জোনের উপ-কমিশনার আরেফিন জুয়েল। পরিচালনায় ছিলেন আরএমপির কর্ণহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহীন। সভায় বক্তব্য রাখেন দামকুড়া থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম।

উপস্থিত ছিলেন, কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাদারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান নবাবসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা। এরআগে বিট পলিশিং কার্যালয়ের উদ্বোধন ও জনগণের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।

  • 157
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে