ভারি যানবাহনের দখলে রাজশাহী নগরী

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২০; সময়: ৪:১৬ অপরাহ্ণ |
ভারি যানবাহনের দখলে রাজশাহী নগরী

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজশাহী মহানগরীতে অবাধে চলছে বালুর ট্রাক, ডাম্পার ও ইটের ট্রলি। বিশেষ করে বালুবাহী ট্রাক ও ইটবাহী ট্রলির দখলে নগরীর ছোটবড় সড়ক ও অলিগলি। এসব ভারি যানবাহনের কারণে নগরীর সড়ক অবকাঠামো ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি বেপরোয়া ট্রাক ও ট্রলির চাপায় প্রাণহানির ঘটনাও বাড়ছে। এরপরও এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে মহানগর পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা নেই।

জানা যায়, নগরীর আশপাশ, পবা, গোদাগাড়ী, পুঠিয়া, দুর্গাপুর ও চারঘাট এলাকায় গড়ে উঠেছে দুই সহস্রাধিক ইটভাটা। পাশাপাশি পদ্মার উজানে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ থেকে ভাটিতে চারঘাট-বাঘা পর্যন্ত বৈধ-অবৈধ মিলে অর্ধশতাধিক পয়েন্টে পদ্মা নদী থেকে চব্বিশ ঘণ্টায় গড়ে তিন হাজার ট্রাক বালু উত্তোলন হচ্ছে। এসব বালুবাহী ট্রাক ও ডাম্পার দিনের বেলায়ও অবাধে নগরীতে প্রবেশ করছে। ফলে যানজটের পাশাপাশি নগরবাসীকে ফেলছে মারাত্মক ভোগান্তিতে। খোলা ট্রাকে বালু বহন করায় নগরীতে বায়ুদূষণও বাড়ছে।

নগরীর মূল চারটি প্রবেশদ্বারসহ মোট ১৭টি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন অনবরত নগরীতে ঢুকছে আর বেরুচ্ছে ৫ হাজারের বেশি ইটবাহী ট্রলি। ডেভেলপার বা ভবন নির্মাণকারীরা ভাড়া কমাতে ট্রাকের বদলে ট্রলিতেই ইটসহ নির্মাণ সামগ্রী বহনে বেশি আগ্রহী। এ কারণে গোদাগাড়ী, দুর্গাপুর, পুঠিয়া এমনকি নাটোর থেকেও ট্রলিতে করে নগরীতে ইট আসছে।

অন্যদিকে ডেভেলপাররা ট্রাকের বদলে ভারি ডাম্পারে বালু নিচ্ছেন কম ভাড়ায় বেশি বালু পাওয়ার কারণে। এসব ভারি যানবাহনে নগরীর সড়কগুলো অতিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

তারা জানান, নগরীর প্রতিটি প্রবেশদ্বারে ট্রাফিক পুলিশকে মোটরসাইকেল আটকাতে তৎপর দেখা গেলেও খোলা বালু ট্রাক, ভারি ডাম্পার ও ইটের ট্রলি আটকাতে দেখা যায় না। ৯ নভেম্বর নগরীর চৌদ্দপাই এলাকায় বালুবাহী ট্রাকচাপায় নিহত হন বেলপুকুর থানার পুলিশ কনস্টেবল মোয়াজ্জেম হোসেন। এর আগেও বালু ট্রাক ও ট্রলিচাপায় পুলিশসহ সাধারণ নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে।

এদিকে ট্রলি চালক ও মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইট বোঝাই ট্রলি নগরীতে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে তাদের সমিতির মাধ্যমে বিভিন্ন ট্রাফিক বক্স ও থানা পুলিশের সঙ্গে তাদের মৌখিক মাসোয়ারা চুক্তি রয়েছে।

একাধিক ট্রলি মালিক নাম প্রকাশ না করে বলেন, নগরীতে ট্রলি চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ট্রলিপ্রতি মাসিক একশ’ টাকা ও প্রতি ট্রিপের জন্য ৫০ টাকা করে দিতে হয়। সমিতির মাধ্যমে তারা পুলিশকে ম্যানেজ করেন। অন্যদিকে বৈধ অবৈধ বালুঘাটের মালিকরাও একইভাবে ট্রাফিক ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই বালু ট্রাক ও ডাম্পার চলাচল নিশ্চিত করেন।

আরএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি-ট্রাফিক) অনির্বাণ চাকমা বলেন, ট্রাফিক আইন অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নগরীতে বালুট্রাক ও ডাম্পার এবং ইটবাহী ট্রলি চলাচল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এরপরও কোথাও কোথাও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দু’একটি ঢুকে যেতে পারে।

ট্রাক-ট্রলি থেকে ট্রাফিক পুলিশের টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, গত অক্টোবরে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৩ হাজার ৬৯৬টি মামলা হয়েছে, যা থেকে ৩৮ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। একই সঙ্গে নভেম্বর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত ২ হাজার ৮৮১টি মামলা হয়েছে। সূত্র- যুগান্তর

  • 17
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে