‘টাকা গেছে দুঃখ নাই, তবে আর কারো যেন এমনটা না হয়’

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২০; সময়: ১:৫৩ অপরাহ্ণ |
‘টাকা গেছে দুঃখ নাই, তবে আর কারো যেন এমনটা না হয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : টাকা গেছে দুঃখ নাই, তবে আমার মতো যেন আর কারো এমনটা না হয়। এ কথা বলছিলেন সিজারিয়ান অপারেশনে বাচ্চা প্রসব করা এক প্রসুতি মা। স্থানীয় এক ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনে বাচ্চা প্রসব করানোর পর, সৃষ্ট ইনফেকশনের ক্ষতস্থান সারাতে আরেক ক্লিনিকে দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার (অপারেশন) করাতে হয়েছে তার। যার খেসারত দিতে হয়েছে পরিবারকে।

দ্বিতীয়বার মা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন প্রসুতি লাবনী। সে বাঘা উপজেলার মর্শিদপুর গ্রামের রাকিবুলের স্ত্রী। সোমবার (২৩ নভেম্বর) সেখান থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

তার ও পরিবারেরর সাথে কথা বলে জানা যায়, সন্তান সম্ভবনায় প্রসব বেদনা উঠলে গত মাসের ৫ অক্টোবর স্থানীয় সেবা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনে বাচ্চা প্রসব করান লাবনী। এটা ছিল তার দ্বিতীয় সিজারিয়ান। ১৫ দিন পর তার পেটের কাটা জায়গার পাশে ভাঁজ হয়ে ফুলে উঠে। সেই চামড়ার ভাঁজের মধ্যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। চিন্তায় পড়ে দেখাতে যান অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া সেই চিকিৎসক আফসানা আক্তারের কাছে। (গাইনি ও প্রসুতি রোগে অভিজ্ঞ)। সমস্যা হবেনা বলে ক্ষতস্থানটি ড্রেসিং করে দেন তিনি নিজেই। তার পরামর্শে বেশ কয়েকবার ড্রেসিং করানো হয়।

কিন্তু কোন উন্নতি না হয়ে আরো জটিল আকার ধারন করে। যার ফলে এ মাসের ১৫ নভেম্বর মা ক্লিনিক এন্ড ডায়ানস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখান চিকিৎসক জিল্লুর রহমানের কাছে। তার পরামর্শে ১৬ নভেস্বর ওই ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে ক্ষতস্থানের ইনফেকশন সারানোর জন্য আরেকবার অস্ত্রোপচার করান। এই ক্লিনিকে অপারেশনের ৪ হাজার টাকা বাদেও প্রতিদিন দিতে হয়েছে, কেবিন ভাড়া ৪০০ টাকা ও ড্রেসিং খরচ বাবদ ৩০০ টাকা। আর প্রতিদিন ঔষধ কিনতে হয়েছে প্রায় ৫০০ টাকার। অস্ত্রোপচার করা ক্ষতস্থানের পাশের আরেকটি ক্ষতস্থানের সেলাই করানোর জন্য দিতে হয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এর আগে সেবা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ক্লিনিকে ঔষধ বাদে সিজারিয়ান অপারেশনে খরচ হয়েছে সাড়ে ৪হাজার টাকা।

মা ক্লিনিক এন্ড ডায়ানস্টিক সেন্টারে অস্ত্রপচারে অংশ নেওয়া চিকিৎসক জিল্লিুর রহমান জানান, সেলাই কেটে একটিভ ব্লিডিং পয়েন্ট দিয়ে রক্তক্ষরণ কিংবা কোন দুষন থেকে এমনটা হতে পারে।

চিকিৎসক আফসানা আক্তার জানান, তার সাথে অস্ত্রোপচারে অংশ নিয়েছিলেন এ্যানাসথেসিয়ার (অজ্ঞানের) চিকিৎসক শহিদুল ইসলাম তাজ। তার দাবি, ৯/১০ দিনে সেলাই কাটা হয়। কিন্তু ওই প্রসুতি দেরি করে দেখাতে আসেন। বেল্ট ব্যবহার ছাড়াও অন্য কোন কারণে হতে পারে। তবে কাজ করতে গিয়ে এ ধরনের ছোটখাটো এক-দুটি দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তার পরেও চেষ্টা করেছেন। তাকে রামেক হাসপাতালে দেখানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্ত তাড়াহুড়া করে আরেক ক্লিনিকে দেখিয়েছেন শুনেছি।

যোগাযোগ করলে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা.আকতারুজ্জামান বলেন, দক্ষ হাতে এ ধরনের অস্ত্রোপচার করা উচিত। এছাড়াও এ ধরনের রোগীদের সুপারভিশনে রাখতে হয়। ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী,ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মহাঃ এনামুল হক বলেন, এটা কোন অস্বাভিক বিষয় নয়। সেলাইয়ের সুতা গলে না যাওয়ার কারণেও এমনটা হতে পারে।

  • 8
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে