রাজশাহীতে করোনাকালে খামার নিবন্ধনে আগ্রহ বাড়ছে খামারিদের

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২০; সময়: ১:৪৬ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে করোনাকালে খামার নিবন্ধনে আগ্রহ বাড়ছে খামারিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাকালে রাজশাহীতে খামার নিবন্ধনে আগ্রহ বেড়েছে। বিগত বছরগুলোতে খামারিরা নিবন্ধনে আগ্রহ না দেখালেও করোনাকালে প্রণোদনা সুবিধা ও নগদ সহায়তাকে সামনে রেখে খামার নিবন্ধন করছেন। তবে খামার নিবন্ধন বাধ্যতামূলক না হওয়ায় এখনোও সিংহভাগ খামার নিবন্ধনের বাইরেই রয়েছে।

রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের হিসেবে জেলায় হাঁস, মুরগি, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, গাভীসহ গবাদিপশু ও পোল্ট্রির মোট ১৪ হাজার ২২০ টি খামার রয়েছে। এরমধ্যে ১৪ হাজার ৯৬ টি পোল্ট্রি খামার অনিবন্ধিত এবং নিবন্ধিত খামার ১২৪ টি। যা বর্তমানে ২৯৩ টিতে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে ১৪৬ টির নিবন্ধন করোনাকালীন প্রণোদনা সুবিধাকে সামনে রেখে হয়েছে। করোনাকালে গাভি খামার নিবন্ধন হয়েছে ৯৪ টা, হাঁস-মুরগি ৪৭ টা, ভেড়া ও ছাগল ৫ টা।

রাজশাহীতে নিবন্ধন ছাড়াই চলছে অধিকাংশ খামার। আর নিবন্ধনহীন খামারগুলো সরকারের নজরদারির বাইরেই থেকে যাচ্ছে। সংশিষ্টরা বলছেন, খামার নিবন্ধন নীতিমালায় দুর্বলতা এবং খামারিদের গাফিলতির কারণেই খামারগুলো চলছে নিবন্ধন ছাড়াই। মূলত রাজস্ব ফাঁকি দিতেই খামারিরা নিবন্ধন করছেন না। এছাড়া নিবন্ধনের সুবিধা-অসুবিধা ও ভোগান্তি বিবেচনায় নিবন্ধন করতে আগ্রহী হচ্ছে না খামারিরা। তবে করোনাকালে প্রাণিসম্পদ বিভাগের তৎপরতা ও সহযোগী এনজিওগুলোর কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় খামার নিবন্ধন বাড়ছে এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

নীতিমালা অনুযায়ী ৩ টি শ্রেণেিত ভাগ করে খামার নিবন্ধন করা হয়। গাভির খামারের ক্ষেত্রে ১০ টির উপর গাভি থাকলে নিবন্ধন করা হবে। এক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ টি গাভি থাকলে ‘সি’ শ্রেণি, ২১ থেকে ৫০ টি ‘বি’ শ্রেণি, ৫০ উর্ধ্বে ‘এ’ শ্রেণী। ছাগল ও ভেড়ার ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৪০ টি ‘সি’ শ্রেণি, ৪১ থেকে ৬০ টি ‘বি’ শ্রেণী,৬০ এর উর্ধ্বে ‘এ শ্রেণি। তিনটি ক্যাটাগরিতে আলাদা আলাদা ফি প্রদানের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয়।

রাজশাহীর পবা উপজেলার খামারি সাগর আলী জানান, খামার নিবন্ধন করে কোনো লাভ নেই। বরং ভোগান্তিই বেশি। বছর বছর রেন্যু করতে হবে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হলে তো কোনো সহায়তা দেয়া হয় না। ইউনিয়ন পরিষদেও একটি নিবন্ধন আছে। আর করোনাকালীন নগদ সহায়তাকে সামনে রেখে নিবন্ধন করতে চেয়েছিলাম। তবে কিছু সমস্যার কারণে নিবন্ধন করেন নি তিনি।

এ বিষয়ে রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, খামার নিবন্ধন করলে সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও রয়েছে। সরকারিভাবে যে তালিকা করে রাখা হয়েছে তার চেয়ে খামার সংখ্যা বাড়ছে। রাজশাহীতে লেয়ার, ব্রয়লার, হাঁসের খামার প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। কিন্তু নিবন্ধন তেমন বাড়েনি। তবে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ নিতে অনেক খামারি নিবন্ধন করছে।

এছাড়া নগদ কিছু সহায়তায় নিবন্ধনকারী খামারিদের অগ্রাধিকার দেয়া হবেÑএমন কারণে খামারিরা নিবন্ধনে আগ্রহী হচ্ছেন। আর আমরা নিবন্ধন করতে উৎসাহ প্রদান করছি। আর একটা সময় নিবন্ধন নিয়ে খামরিদের ভয় ছিল। তারা নিবন্ধন করতে চাইতো না। কিন্তু এখন সেই ভয় নেই, খামারিরা নিজ উদ্যোগে নিবন্ধন করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. ইসমাইল হক জানান, খামার নিবন্ধন এখন পর্যন্ত বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তবে আশা করা হচ্ছে মাংস, দুধ ও ডিমের মানসম্মত উৎপাদনে ও গুনগত মান নিয়ন্ত্রণে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। আর করোনাকালে প্রণোদনা সহায়তাকে সামনে রেখে অনেক খামারিই নিবন্ধন করছেন। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে খামারিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে