স্ত্রী কোন বাড়িতে থাকবে তা নিয়ে রাজশাহীতে কোর্ট চলাচলাকালে মারপিট

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২০; সময়: ৫:০৫ অপরাহ্ণ |
স্ত্রী কোন বাড়িতে থাকবে তা নিয়ে রাজশাহীতে কোর্ট চলাচলাকালে মারপিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে কোর্ট চলাকালে অভিযোগকারীদেরকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে রাজশাহী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।

সাধারণ ডায়রি ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শানিম ইয়াসির সোহান (২১) এবং নুসরাত সুলতানা (১৮) গত ২৯ অক্টোবর স্বেচ্ছায় কাজী অফিসে বিয়ে করে। এই বিয়ে সোহানের পরিবার মেনে নিলেও নুসরাতের পরিবার মেনে নেয়নি এবং নুসরাতকে আটকে রেখে নানা ভাবে নির্যাতন করে। এমন অবস্থায় ছেলে রাজশাহী বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করে। সোমবার (৯ নভেম্বর) মামলার দিন ধার্য করা হলে উভয়পক্ষ কোর্টে হাজির হয় এবং আদালত চলাকালে নুসরাতের মতামত জানতে চাইলে তিনি স্বামীর সাথে থাকার পক্ষে মত দেন। এসময় আদালতের বারান্দায় দুই পক্ষের মধ্যে হট্টোগোল শুরু হয়। সোহান ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ঐ সময় নুসরাতের পরিবারের লোকজন তাদেরকে মারপিট করেছে। উত্তেজনা চড়িয়ে পড়লে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুমা খাতুন জানান, রাজশাহী বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং ১, মামলা নম্বর পি/২২০ (বোয়ালিয়া) এর সোমবার দুপুরে মামলার দিন ধার্য মোতাবেক এজলাস শুরু হয়। এরপর ভিকটিমকে কোর্টে জিজ্ঞাসা করা হলে ভিকটিম তার জবানবন্দিতে স্বামীর ভাত খাবো বলে। এমন সময় মেয়ের বাবা হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আগামী ৯ ডিসেম্বর কোর্ট এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করে দেয়।

তিনি জানান, এসময় ভিকটিমের ভাই ও ভাইয়ের বন্ধুসহ কয়েকজন এজলাস চত্বরে জড়ো হয়ে অভিযোগকারীর পরিবারের উপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারপিট ও গালাগালি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে রাজপাড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সোহানের মা মোসা:শিউলি বেগম। রাজপাড়া থানায় কর্মরত ডিউটি অফিসার এএসআই আলমগীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী শানিম ইয়াসির সোহান জানান, আমাদের ভালোবাসার বয়স হয়ে যাই একবছর এর মতো। আমার পরিবার থেকে প্রথমে এগুলা অমান্য করলেও পরে সবাই মেনে নেয়। কিন্তু নুসরাতের বাসায় এগুলা কোনো ভাবেই মেনে নেয়নি। আমাদের রিলেশন এর ব্যাপারে জানার পরই তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। এরপর ২৯ অক্টোবর নুসরাত বাসা থেকে বের হয়ে চলে আসলে আমরা বিয়ে করি।

সোহান বলেন, বিয়ের পর নুসরাতকে নিয়ে আমি আমার বাসায় গেলে নুসরাতের ভাইসহ আত্মীয়রা প্রশাসন কে সাথে নিয়ে আমার বাসায় আসে৷ নুসরাত প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে প্রশাসনের সামনে আমার সাথে থাকবে তাই বলে। এরপর নুসরাতের পরিবার এবং আমার পরিবার সহ আমরা নগরীর বোয়ালিয়া থানায় যাই। সেখানে পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেওয়া সহ বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের সামনেই বিষয়টির মিমাংসা হয়ে যাই। কিন্তু পরে সেখান থেকে বাসায় গেলে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আমার সাথে মেয়ের সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এবং তাকে আটকে রেখে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে।

সোহান আরো বলেন, নুসরাতকে উদ্ধারের জন্য আমি আদালতে মামলা করি৷ সোমবার (৯ নভেম্বর) মামলার দিন ধার্য করা হলে উভয়পক্ষ কোর্টে হাজির হয় এবং কোর্টের কার্যাবলি যথারীতি চলতে থাকে। এরপর নুসরাতকে কোর্টে জিজ্ঞাসা করা হলে সে তার জবানবন্দিতে আমার ভাত খাবে বলে। এসময় নুসরাতের পরিবারের লোকজন আমার পরিবারকে বেধড়ক মারপিট ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

রাজশাহী মহানগর কোর্ট এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, মেয়ের বিয়ের রায়কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের আত্বীয়দের সাথে হট্টোগোল শুরু হয়। এসময় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশেই তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

  • 130
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে