একাত্তরের বীর যোদ্ধা শহীদ শামসুল আলমের স্বীকৃতির দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের রাজনৈতিক সহকর্মী আলহাজ্ব মৃত মো. রুহুল আমিন সরকারের বড় ছেলে শহীদ শামসুল আলম। রাজশাহী মহানগরীর হড়গ্রাম মুন্সিপাড়ায় ছিলো যার বসবাস। পড়ালেখা করতেন রাজশাহী কলেজে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর অগ্নিঝড়া ভাষণ উদ্দীপ্ত করে তাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি অংশগ্রহণ করেন যুদ্ধে। ৭ নং সেক্টরের বিভিন্ন এলাকায় তিনি সম্মুখ যুদ্ধেও অংশ নেন।
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে শহীদ শামসুল হকের দল রাজাকারদের আস্তানায় হানা দেয়। কিন্তু তাদের অন্যতম দুই সদস্য সাইদুর রহমান ও আবু তালেব ধরা পড়ে যান রাজাকারদের হাতে। নির্যাতন চালিয়ে এই দুজনের কাছ থেকে দলের অন্যদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে রাজাকারেরা।
১১ নভেম্বর ১৯৭১, শামসুল আলমসহ ৬ জন ধরা পড়েন রাজাকারদের হাতে। হড়গ্রামের ফাল্গুনী ক্যাম্পে তাদের প্রথমে নেয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে রাজাকারদের স্থাপিত টর্চার সেলে। সেখানে নির্যাতন করে ১৩ নভেম্বর শামসুল আলম সহ আরও অনেককে হত্যা করা হয়। কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সানাউল্লাহ। এই সানাউল্লাহ পরবর্তীকালে নিশ্চিত করেন শহীদ শামসুল আলমের মৃত্যু।
বিজয় অর্জনের পর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এই শহীদ পরিবারের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সাথে ২ হাজার টাকার। কিন্তু এ পর্যন্তই শেষ। এই শহীদ পরিবারের কেউ কোনো খোঁজ আর রাখেনি। শামসুল আলম শহীদ হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে তারই কোনো স্বীকৃতি নেই এখন।
এদিকে, জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ রাজশাহীর গণদাবি বাস্তবায়নসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-চেতনা রক্ষার দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শহীদ শামসুল আলমের স্বীকৃতির দাবিতেও তারা মাঠে নামতে চাই। এ উপলক্ষে তারা আয়োজন করেছে শহীদ শামসুল আলম স্মরণসভার। আগামী ১৩ নভেম্বর রাজশাহী প্রেসক্লাবে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। এ স্মরণসভায় যোগ দেয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
52