রাজশাহী ওয়াসার জমিতে অবৈধভাবে বালু মজুদ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২০; সময়: ৪:৩২ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী ওয়াসার জমিতে অবৈধভাবে বালু মজুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতুলি ইউনিয়নের রানীনগর মৌজার বালুমহাল জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা নেন সেখানকার বালু ব্যবসায়ী মনির হোসেন বকুল। কিন্তু এই বালুমহালের নামে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন তিনি। এছাড়াও তিনি রাজশাহী ওয়াসার জমির উপর অবৈধভাবে বালু মজুদ করছেন।

জানা গেছে, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন গোদাগাড়ীর দুটি বালুমহালের ইজারাদার। জাহাঙ্গীর আলম ও মনোয়ারুল হোসেন দিপলু নামের এক বালু ব্যবসায়ী রাজশাহী জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় সোয়া চার কোটি টাকায় গোদাগাড়ীর ৫ ও ৬নং মৌজার দুটি বালুমহাল ইজারা নেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইজারাদার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় তারা লোকসান গুনছেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে গত ২৯ জুন ও ২ জুলাই প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৪ জুলাই রাজশাহী জেলা প্রশাসন চিঠি দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়। পরে উপজেলা প্রশাসন গিয়ে বালু তোলা বন্ধ করলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনী কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে কিছুদিন পর ফের একইভাবে বালু উত্তোলন শুরু করে।

ইজারাদার মনির হোসেন বকুল বলেন, ইজারা নেওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীনগর বালুমহাল থেকেই বালু উত্তোলন করেন। সেখান থেকে নৌকায় বালু বহন করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সারাংপুরের জোতগোসাইদাসে এনে মজুদ করা হচ্ছে। বৈধ বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন করে দেশের যে কোনো স্থানে রাখতে পারি। এটা অবৈধ কিছু নয় বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, যে স্থানে বালু মজুদ করা হয়েছে তা রাজশাহী ওয়াসার কাছ থেকে লিজ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সেখানে আমার চাচা নজরুল ইসলামের জমিও রয়েছে। তার কাছ থেকেও সে জমি লিজ নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন এই বালু ব্যবসায়ী।

তবে রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মাসুদ বলেন, ওয়াসার জমি লিজ দেয়ার প্রশ্নেই আসে না। কিন্তু তাদের জমির উপর বালু রাখা হয়েছে কি না তাও জানা নেয়। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হবে। ওয়াটার প্লান্ট করার জন্য জোতগোসদাস ও পালিয়া এলাকায় ৫২ একর জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে জানান তিনি।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি বালুমহাল ইজারাদার কিছু বালু চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাখেন আর কিছু বালু গোদাগাড়ীতে মজুদ করছে। এটা একটা নৈতিকতার প্রশ্ন। এতে করে আমার জেলার ইজারাদার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা তাকে এখানে বালু মজুদ করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের একটি স্টে অর্ডার নিয়ে এসেছেন। এ জন্য আমরা আইনগতভাবে কিছু করতে পারছি না। তবে পাল্টা রিট করার বিষয়ে আমার ইজারাদারকে সহযোগিতা করছি।

তিনি বলেন, ইজারার শর্ত অনুযায়ী সরকারি জমিতে কোন ইজারাদার বালু মজুদ করতে পারবেন না। সেটি যদি হয়ে থাকে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

  • 194
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে