বাগমারায় মুক্তিযোদ্ধাকে মারপিট করে অপহরণ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২০; সময়: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় মুক্তিযোদ্ধাকে মারপিট করে অপহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় এক মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর ছেলেকে বিলে মাছ ধরার অপরাধে মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিন ঘন্টাপর পুলিশ ওই মুক্তিযোদ্ধাকে আওয়ামী লীগ নেতার চেম্বার থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়। তবে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতার দাবি মুক্তিযোদ্ধা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খালিশপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী (৭০) ও তাঁর ছেলে রাজু আহম্মেদ (২৫) জাল নিয়ে বাড়ির পাশে বিলসতি বিলে মাছ ধরতে যান। খবর বিলে ওই এলাকার বাসিন্দা আবদুল আলী, বাবু হোসেন, আসলাম আলীসহ ১০-১২জন ব্যক্তি নৌকা নিয়ে বিলে যান। নিজেদের বিলের ইজারাদারের লোক দাবি করেন।

তাঁরা বিলে মাছ ধরা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ও তাঁর ছেলে রাজু আহম্মেদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে নৌকার বৈঠা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর ছেলেকে পিটিয়ে জখম করে নৌকায় করে। মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর ছেলে তাঁদের নৌকায় ওঠিয়ে প্রায় কিলোমিটার দূরে ছোটকয়া এলাকার ইসলামের মোড়ের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে আসেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা উদ্ধারের চেষ্টা চালান। ব্যর্থ হয়ে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ তিনঘন্টা পর রাত নয়টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।

মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী অভিযোগ করেন, ছেলেকে নিয়ে মাছ ধরতে গেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমের নির্দেশে তাঁর লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের মারপিট করে আটক রাখে। যেখানে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন তা ব্যক্তিমালিকানা জমি। ইজারা নেওয়া বা খাস জমি সেখানে নেই। হামলায় তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

তবে আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ইজারা নেওয়া বিলে মুক্তিযোদ্ধা, তাঁর ছেলে ও অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি সন্ধ্যায় চুরি করে মাছ ধরতে গেলে পাহারাদার তাঁদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এসময় পাহারাদারকে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি মারপিট করে পালিয়ে যান। পরে এরশাদ আলী ও তাঁর ছেলে ধরে নিয়ে আসা হয়েছিল। থানায় খবর দেওয়া হলে রাত নয়টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিয়ে যান। আর কোনোদিন ইজারা নেওয়া বিলসতি বিলে মাছ ধরবেন না বলে তাঁরা মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তাঁকে সম্মান করা হয়েছে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা গায়ে হাত তোলা ও মারপিট করা দুঃখজনক। অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তবে মারপিট করা ঠিক হয়নি।

বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, মৎস্যজীবী সমিতিকে বিলটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে সেখানে মাছ ধরা নিষেধ রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। তাঁদের মারপিট করা হয়নি।

  • 35
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে