হত্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ ব্যবসায়ীর

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২০; সময়: ৪:৩৩ অপরাহ্ণ |
হত্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ ব্যবসায়ীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে এক ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে মিথ্যা হত্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ করেন ভুগরোইল পশ্চিমপাড়া এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে দেওয়ান শামিম আহমেদ। তিনি বলেন, ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তার পরেও আমাকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

শামিম আহমেদ বলেন, তিনি একজন সমাজ সেবক ও ব্যবসায়ী। ভূগরোইল কেন্দ্রীয় গোরস্থান কমিটির সভাপতি ও ধর্মীয় শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠান সানবীম একাডেমীর পরিচালক। তাকে সমাজের চোখে হেও প্রতিপন্ন করার জন্য চক্রান্ত করে পরিকল্পিত ভাবে তার নামটি হত্যা মামলায় যোগ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে হত্যার হুকুম দেইনি। সেইসাথে নিহত পরিবারের সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত লেনদেন বা পূর্ব শত্রুতা নাই। তাকে এই মামলায় জড়ানোর নিন্দা জানান। সেইসাথে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি’।

তিনি আরো বলেন, একই এলাকার বাসিন্দা হান্নান ও তার ছেলে সেলিম রেজার সহিত আমার সম্পর্ক খুবই ভালো ছিলো। তাদের সাথে আমার কোন পূর্ব শত্রুতা বা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক দন্দ ছিল না। তার পরেও আমাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যে হুকুমের আসামিসহ ৪ নং আসামি করা হয়েছে। কার প্ররোচনায় আমাকে এ হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়।

এ ঘটনায় ভুগরোইল পশ্চিমপাড়া এলাকায় বিষয় সম্পর্কে খোজ নিতে গেলে এলাকাবাসী ও সাক্ষীরা বলেন,গত রমজানে ঝুমুর ও হান্নানদের মধ্যে ঈদগাহ ময়দানে বাকবিতন্ডা ও মারামারির মত ঘটনা ঘটেছিলো। এনিয়ে শাহ্ মখ্দুম থানায় মামলা হয়। এ বিষয় নিয়ে হান্নান ও সেলিমের সাথে আজাদ, সাজ্জাদ ও ঝুমুরের মধ্যে গন্ডোগল হয়।

এদিকে মামলার স্বাক্ষী শরিফ বলেন, শামিম ঘটনার সময় ছিলোনা এবং জড়িতও নয়। আমাকে যেহেতু ঘটনার স্বাক্ষি করা হয়েছে। আদালতে তিনি সত্য কথাই বলবেন। তিনি আরও বলেন, শামিমকে অন্যায় ভাবে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। এ হত্যা মামলার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নাই। তিনি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না বা অন্য কোন ভাবেও জড়িত না বলে জানান তিনি।

অপর সাক্ষী জুয়েল বলেন, শামিম একজন ভালো মানুষ। তিনি একটি ধর্মীয় শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠান সানবীম একাডেমীর পরিচালক। এখানে কোরআন হাদিসের আলোকে মক্তবে পাঠ্যদান করা হয়। তিনি এই ঘটনার সময় ছিলেন না। শামিম নির্দোষ বলে দাবী করেন জুয়েল। একই কথা বলেছেন, ঘটনার স্বাক্ষী সোহেল রানা। তিনি বলেন, আমি ঐ দিন এলাকাতেই ছিলাম না, তারপরও আমাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। আমি লোকজনের মুখে শুনেছি শামিম ঘটনার সময় ছিলেন না। এ ছাড়া মামলাটির অপরাপর স্বাক্ষী, আব্দুল হাকিম, কাইমুদ্দিন, মাইনুল, বাবু এবং সোবহানও একই কথা বলেন। ঘটনার সময় শামিমকে তারা ঘটনাস্থলে দেখেননি।

প্রতিবেশী পারুল বেগম বলেন, ঘটনার দিন আমি মাঠে ছাগল চরাচ্ছিলাম। এসে শুনি হান্নান সেলিমদের সাথে সাজ্জাদ, ঝুমুর ও আজাদ নামে প্রতিবেশীর সাথে মারামারির হয়েছে। এতে হান্নান ও সেলিম গুরুতর আহত হয়। ওখানে শামিম ভাই ছিলেন না এটা আমি লোকমুখে শুনেছি।

ভুক্তভোগী দেওয়ান শামিম আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, ঘটনার দিন ঐ সময়ে আমি তানোরের কালিগঞ্জ বাজারের তামান্না কোল্ডস্টোরেজ এ ব্যবসার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। কোল্ডস্টোরেজ এর কাজের জন্য ব্যাস্ত থাকলেও তাকে উদ্দেশ্যেমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত হলে সত্যটা বেরিয়ে আসবে বলে তিনি দাবী করেন। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি হোক এটি তিনিও চান বলে জানান শামিম।

উল্লেখ্য, রাজশাহীর পবা উপজেলার ভুগরোইল পশ্চিমপাড়া মোড় এলাকার হান্নানের ছেলে সেলিম রেজাকে মারপিট করে হত্যা করা হয়। গত বছরের ২৬ জুলাই এলাকার প্রতিবেশীদের দ্বারা নৃশংস হামলার শিকার হন আবদুল হান্নান ও তার ছেলে সেলিম রেজা।

এর দুইদিনের মাথায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রিলিজ দেই এবং তিন দিনের মাথায় আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে গত বছরের ২৯ জুলাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সেলিম। সেলিম হত্যা ঘটনায় ঐ দিনই ২১ জনকে আসামী করে শাহমখদুম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা আবদুল হান্নান।

  • 21
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে