রাজশাহীতে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে আলু!

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২০; সময়: ৩:২৫ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে আলু!

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক মাস আগে বাজারে আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকায় পাওয়া যেতো। কিন্তু মাস ঘুরতে না ঘুরতে সেই আলুর দাম এখন বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। বর্তমানে রাজশাহীর খুচরা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।

খুচরার পাশাপাশি আলুর দাম বেড়েছে পাইকারী বাজারেও। আলুর দাম বাড়ার বিষয়ে পাইকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যে ত্রাণ বিতরণে আলুর ব্যবহার উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে এ কারণে আলুর মজুদ শেষ হয়ে আসছে। তাছাড়া আলুর উৎপাদন কম হওয়া, বন্যায় নতুন আলুর রোপণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়া। এছাড়া নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলুরও দাম বাড়ে সমান্তরালভাবে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলু পাইকার বাজার থেকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিতে বহন খরচ, চাঁদা, পরিবহন ভাড়া ও দোকান ভাড়া লাগছে। শুধু তাই নয়, পাইকার বাজারে আলুর দামও চড়া। আমাদের বেশি দাম দিয়ে পাইকার বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে।

হঠাৎ আলুর দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রাজশাহীর সাহেব বাজার কাঁচাবাজারের ব্যাবসায়ী রিপন বলেন, আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো মূলত করোনার ভয়াবহ সময়ে ত্রাণ বিতরণে ব্যাপকহারে আলুর ব্যবহার হয়েছে। এতে আলুর আড়তসহ স্থানীয় বাজারে আলুর সরবরাহ কমে যায় এতে দাম বাড়তে থাকে।

আরেক ব্যাবসায়ী দেলোয়ার বলেন, জমিতে আলুর উৎপাদন কম হওয়া, চলমান বন্যায় নতুন আলুর ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সহ অন্যান্য সবজির দাম বাড়ার সঙ্গেও আলুর দাম বাড়ার কারণ জড়িত আছে। তবে এখন স্থানীয় পর্যায়ে আলু খুব বেশি নেই, আলুর যোগান কমে আসায় দাম বাড়ছে। বাজারে নতুন আলু উঠলে দাম কমবে।

এদিকে সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং না করায় অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, যখন দেশের মধ্য একটা জিনিসের সংকট দেখা দেবে তখন অন্যটির দাম বাড়ানো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আলুর দাম বাড়ার পেছনেও কাজ করেছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। নিয়মিত বাজার মনিটরিং না হওয়া আর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে আলু।

রাজশাহীর সাহেব বাজারের কাচাবাজারে আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে আসা শহীদুল জানান, বন্যায় ফসল এর ক্ষতি হয়েছে। এতে বাজারে শাক সবজির দাম বাড়বে। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু বাজার দর বাড়ার একটা মাত্রা আছে। সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম বাড়াচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

আলুর দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে ক্রেতা মোজাফফর বলেন, বন্যার কারণে জমিতে সবজির আবাদ কম হওয়ায় আশ্বিন-কার্তিক মাসে দাম বেড়ে যায়। এসময় আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের সমস্যায় পড়তে হয়। বাড়তি দাম দিয়ে আলু কেনায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। আর বাজারের খুচরা দোকানিরা এই সুযোগে বাড়তি দাম হাতিয়ে নিচ্ছে।

এদিকে ইচ্ছেমতো দামে আলু বিক্রির অভিযোগ পেয়ে রাজশাহীর কয়েকটি হিমাগার পরিদর্শন করেছে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক হাসান আল মারুফ। তবে হিমাগারগুলোতে বেশী দামে আলু বিক্রি হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংস্থাটি।

অপরদিকে আলুর পাশাপাশি বাজারে সকল সবজির দামও চড়া। রাজশাহীর কাঁচাবাজারে পটল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। বেগুন কেজি প্রতি ৬০ টাকায় উঠেছে। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে।

 

  • 31
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে