রাজশাহী প্রশাসনের ওয়েবসাইটে ১০ বছর আগের তথ্য

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০; সময়: ৩:৪১ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী প্রশাসনের ওয়েবসাইটে ১০ বছর আগের তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাগজ কলমে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিন্তু ডিজিটাল কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে রাজশাহীর বিভিন্ন সরকারি দফতর। বিস্ময়ের বিষয় রাজশাহী জেলা প্রশাসনে পৃথক একটি আইসিটি বা তথ্য ও প্রযুক্তি শাখা থাকলেও জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে নেই হালনাগাদ তথ্য।

মজার বিষয় হচ্ছে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে ১০ বছর আগের তথ্যই এখনও সরকারি তথ্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে। আবার সন্নিবেশিত তথ্যেও রয়েছে বিস্তর গরমিল। এতে তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে যাদের ভূমিকা অগ্রগণ্য হওয়ার কথা তাদের তথ্যেরই ঠিক নেই। জেলা প্রশাসনের অধীন উপজেলা প্রশাসনসহ অঙ্গীভূত দফতরগুলোর ওয়েবসাইটেও নেই প্রয়োজনীয় ও হালনাগাদ তথ্য। সরকারি অগ্রাধিকারযুক্ত জন পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্যাবলীও ওয়েবসাইটগুলোতে একেবারেই নেই। এতে তথ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ।

জানা যায়, ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি রাজশাহীর ১৪ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ১০ বছর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পৌরসভাগুলোতে যারা মেয়র হয়েছিলেন, রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে তাদের নামই এখনও মেয়র হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। আগের মেয়রদের ফোন নম্বরও দেয়া আছে। এতে কেউ রাজশাহীর পৌরসভাগুলোর বর্তমান মেয়রদের নাম খুঁজতে জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে সাবেক মেয়রদের নামই তারা পাচ্ছেন।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভার বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু। তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হন ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে। কিন্তু জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে এখনও গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র হিসেবে সাবেক মেয়র জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলামের নাম ও ফোন নম্বর দেয়া রয়েছে। যিনি ২০১০ সালের জানুয়ারির ভোটে মেয়র হয়েছিলেন।

তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবুল হাসনাত মোখলেসুর রহমান ওরফে ফিরোজ সরকার দেড় বছর আগে মারা গেছেন। তবে জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে তানোর পৌর মেয়র হিসেবে মোখলেসুর রহমানের নাম উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে তানোর পৌরসভার মেয়র ও বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানের নাম সেখানে নেই।

২০১০ সালে নির্বাচিত হয়ে কাটাখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র জামায়াত নেতা অধ্যাপক মাজিদুর রহমান বিভিন্ন নাশকতার মামলায় জড়িয়ে প্রায় তিন বছর কারাগারেই ছিলেন। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ভোট করেন কারাগার থেকেই। বর্তমানে কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী। কিন্তু জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে জামায়াত নেতা মাজিদুর রহমান এখনও কাটাখালী পৌরসভার মেয়র।

নওহাটা পৌরসভায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মোকবুল হোসেন মেয়র নির্বাচিত হন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে ২০১০ সালের ভোটে নির্বাচিত মেয়র আবদুল গোফুরের নামই রয়েছে। কেশরহাট পৌরসভার বর্তমান মেয়রের নাম শহিদুজ্জামান শহীদ।

তবে সরকারি ওয়েবসাইটে ১০ বছর আগে নির্বাচিত মেয়র আলাউদ্দিন আলোর নামই এখনও মেয়র হিসেবে রয়েছে। রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নার্গিস খাতুনের নাম জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে রয়েছে।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ ও অধীনস্ত সরকারি দফতরগুলোর ওয়েবসাইটে নেই জন তথ্য। কয়েক বছর আগে বদলি হওয়া কর্মকর্তার নামও রয়ে গেছে ওয়েবসাইটগুলোতে। জনস্বার্থমূলক সরকারি প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র, বিশেষ ঘোষণা, উন্নয়নমূলক কাজের বিজ্ঞপ্তি, জনবিন্যাস, খেয়া ঘাট, ঘাট পারাপারের টোলহার, কৃষি তথ্য, সরকারের কৃষি সহায়তা ছাড়াও হতদরিদ্রদের জন্য প্রদত্ত সরকারি ও সামাজিক সহায়তার কোনো তথ্যই উপজেলাগুলোর ওয়েবসাইটে নেই। জমি-জমা সংক্রান্ত কাগজপত্র, কর ও খাজনা খারিজ ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক সরকারি পরিষেবার তথ্যও কোথাও দেখা যায়নি।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের তথ্য প্রযুক্তি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিটি জেলা প্রশাসনে এসব তথ্য সঠিকভাবে পরিবেশনের জন্য আইসিটি নামের একটি শাখা আছে। তবে আমরা স্বীকার করছি সরকারি ওয়েবসাইটগুলো হালনাগাদ হয়নি। এ কারণে ১০ বছর আগের তথ্যই রয়েছে। এসব দেখে দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। সূত্র- যুগান্তর

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে