রাজশাহী ওয়াসার এমডির তুঘলকি কাণ্ড

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০; সময়: ২:৩৩ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী ওয়াসার এমডির তুঘলকি কাণ্ড

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) গত বছর ১৮ ডিসেম্বর ৪ জন সহকারী প্রকৌশলীকে র্নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেন। বোর্ড সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ পদোন্নতি দেয়া হয়। পদোন্নতি পাওয়া প্রকৌশল কর্মকর্তারা হলেন- মো. রেজাউল হুদা, ইকবাল হোসেন, মো. সোহেল রানা ও মো. মাহবুবুর রহমান।

পদোন্নতির আদেশ পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উচ্চ পদে যোগদান করেন। পদোন্নতির দিন থেকে তারা বর্ধিত বেতন স্কেল ও অন্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ৪ কর্মকর্তার পদোন্নতি স্থগিত করায় ৪ মাস পর তারা পুনরায় আগের পদে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।

এ সংক্রান্ত নথিপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছর ১৮ ডিসেম্বর রাজশাহী ওয়াসার বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ৪ জন প্রকৌশল কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী করা হলেও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পারভেজ মামুদকে প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেয়া থেকে বিরত রাখা হয়।

জানা যায়, প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির বিষয়টি অগ্রাধিকার এজেন্ডায় থাকলেও রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনিচ্ছা ও আপত্তির কারণে তা ভণ্ডুল হয়ে যায়। এতে ওয়াসা বোর্ডের অন্যতম সদস্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দ্বিমত হওয়ায় কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই পদোন্নতির সভাটি শেষ হয়। বোর্ডের অন্য সদস্যরাও সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা ত্যাগ করেন।

সূত্র মতে, বোর্ড সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছাড়াই ৪ জন প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে ১২ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জেসমিন পারভিন স্বাক্ষরিত এক পত্রে রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে ৫টি বিষয়ের ব্যাখ্যা ও নথিপত্র চেয়ে কৈফিয়ত তলব করে চিঠি পাঠান। মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ ছিল, বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত ছাড়া ৪ জন সহকারী প্রকৌশলীকে কীভাবে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যাখ্যা ও প্রতি-চিঠি পেয়ে ৯ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. সামছুল হক স্বাক্ষরিত পত্রে ১৮ ডিসেম্বরের বোর্ড সভায় গৃহীত সব সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত ও বাতিল করেন।

সর্বশেষ পত্রে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রাজশাহী ওয়াসার এমডিকে জানায় সব প্রকার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পারভেজ মামুদকে প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি না দেয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রহস্যজনক। একইভাবে বোর্ড সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছাড়াই ৪ জন সহকারী প্রকৌশলীকে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেয়া বিধিসম্মত ও সরকারের অনুমোদনযোগ্য নীতিমালার পরিপন্থী।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ছাড়াও বোর্ডের অধিকাংশ সদস্যের দ্বিমত ও সম্মতি ছাড়াই পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৪ প্রকৌশলীর পদোন্নতিসহ সহায়ক সুবিধা ও পরিতোষিক স্থগিত করা হল। মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বাড়তি বেতন ও ভাতা সরকারি কোষাগারে জমা করতে বলা হয়। এমডি ছাড়া ওয়াসা বোর্ড সভার সব সদস্য পারভেজ মামুদের পদোন্নতির পক্ষে মত দিয়েছিলেন, যা বোর্ড সভার কার্যবিবরণীতে রয়েছে।

রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান আবদুল হামিদ বলেন, বিষয়টি ওয়াসার অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। সূত্র- যুগান্তর

  • 2.1K
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে