তানোরে হাটের ৪টি দোকানঘর না ভাঙ্গায় চরম উত্তেজনা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০; সময়: ৮:৪২ অপরাহ্ণ |
তানোরে হাটের ৪টি দোকানঘর না ভাঙ্গায় চরম উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : তানোরে গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গায় অবৈধ ভাবে নির্মান করা কয়েকশ দোকানঘর ভাংগা হলেও ৪টি দোকানঘর না ভাঙ্গায় প্রশাসনের রহস্যজনক ভুমিকা নিয়ে ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গোল্লাপাড়া বাজারের দোকানঘর ভাংচরের স্বীকার হয়ে বেকার হয়ে পড়া ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ, ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উপজেলা প্রশাসন ও বাজার ব্যবসায়ীসহ প্রত্যক্ষদর্শি সুত্রে জানা গেছে, গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে দোকান ঘর নির্মান করে ক্ষুদ্র ও মাঝারী প্রকৃতির দরিদ্র জনসাধারণ ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।

তবে, ওইসব অবৈধ ভাবে নির্মান করা দোকানঘরের ব্যবসায়ীরা হাটের ওইসব সরকারী জায়গা নিজেদের নামে লীজ নেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কিন্তুু হাটের জায়গা লীগ দেয়ার নিয়ম নাই জানিয়ে ভুমি অফিসের কর্তকর্তারা লীজ দিতে পারেননি। ফলে এভাবেই ব্যবসা করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা।

সম্প্রতি তানোর উপজেলা প্রশাসন ও ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গায় অবৈধ স্থাপনা দোকানঘর নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নেয়ার জন্য মাইকিং করে এবং ওই সব দোকানঘর ভাংতে শুরু করেন। এর প্রেক্ষিতে গোল্লাপাড়া বাজার বনিক সমিতির নেতারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়ে নিজ নিজ দায়িত্বে ব্যবসায়ীরা দোকানঘর ভেঙ্গে সরিয়ে নিতে শুরু করেন। বর্তমানে বাজারের প্রায় সকল দোকানঘর ভাংচুর করে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

কিন্তুু রহস্যজনক কারনে মেইন রাস্তার ধারে গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গায় অবৈধ ভাবে নির্মাণ করা ৪টি দোকানঘর ভাঙ্গা হয়নি। ওই ৪টি দোকানঘর ভাঙ্গা না হলেও তার পার্শ্বের দরিদ্র শ্রেনীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দোকানসহ (কাঁচামালের) ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

দোকার ভাংচুর হয়ে বেকার হয়ে পড়া ব্যবসায়ীরা ওই ৪ জনকে তাদের দোকান ঘর ভাঙ্গার কথা বলেন এসময় ওই ৪ দোকানী দাম্ভিকতা দেখিয়ে ব্যবসায়ীদেরকে জানায় যে তাদের এই ৪টি দোকান ঘরের জায়গা তারা ইউএনও’র কাছ থেকে লীজ নিয়েছেন তাই তাদের দোকান ঘর ভাঙ্গা লাগবেনা। এমন কথা শুনে ভাংচুর করে নেয়া দোকানীসহ সাধারণ জনগনের মধ্যে প্রশাসনের এমন রহস্যজনক ভুমিকায় বিষ্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাট সৃষ্টির পর থেকে হাটের সরকারী জায়গা একক ভাবে কেউ কখনো লীজ নিতে পারেননি। গোল্লাপাড়া হাটসহ তানোর উপজেলার কোন এমন একটি উদাহরণ নেই যে হাটের সরকারী জায়গা একক ভাবে লীজ পেয়েছেন। তাহলে কি ভাবে এবং কোন আইনে এই ৪টি দোকান তারা লীজ নেয়ার কথা বলছেন। ওই ৪টি দোকান ঘর না ভাঙ্গায় প্রশাসনের রহস্যময় ভুমিকায় বাজার ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

গোল্লাপাড়া বাজার বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন দোকানঘর ভাংচুর শুরু করেছিলো, বনিক সমিতির পক্ষ থেকে এসব দোকান সরিয়ে নেয়ার জন্য সময় নেয়া হয়েছে ২/১দিনের মধ্যেই সকল দোকান সরিয়ে নেয়া সম্পূর্ন হবে।

তবে, তিনি ওই ৪টি দোকান না ভাঙ্গায় এবং একক ভাবে হাটের সরকারী জায়গা লীজ দেয়ার বিষয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন যদি সরকারী জায়গা লীজ দিয়ে থাকেন তাহলে সবাইকে দেয়া হলোনা কেন? কেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এসব দোকানঘর ভেঙ্গে বেকার করে দেয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্র করা হলো?

গোল্লাপাড়া বাজার বনিক সমিতির সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান বলেন, প্রশাসনের খামখেয়ালী পনার কারনে বাজারের কয়েকশ দরিদ্র শ্রেনীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বেকার হয়েগেলো। তিনি বলেন, লীজ দেয়া হলে সবাই দেয়া উচিৎ ছিলো তা না করে প্রশাসন রহস্যজনক কারণে  ৪টি দোকানঘর একক ভাবে দেয়া হলো ? তিনি উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এবিষয়ে জানতে যোগাযোগের জন্য সন্ধ্যা পোনে ৪টার দিকে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো’র মোবাইলে একাধীকবার ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে