নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি রাবির ৯ শিক্ষকের

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০; সময়: ২:৩৬ অপরাহ্ণ |
নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি রাবির ৯ শিক্ষকের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যসহ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন দফতরে দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ দিয়েছিলেন নয় শিক্ষক। আগামী ১৭ ও ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) এই অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই পরিপ্রেক্ষিতে হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা চেয়ে গত রোববার নগরির মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন অভিযোগকারী শিক্ষকরা। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান।

অভিযোগকারী শিক্ষকরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতান-উলÑইসলাম, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সৈয়দ মুহাম্মদ আলী রেজা, সংগীত বিভাগের অসিত রায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মজিবুল হক আজাদ, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের জাহাঙ্গীর আলম, রসায়ন বিভাগের তারিকুল হাসান, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের মো. মিজানুর রহমান, নাট্যকলা বিভাগের এস এম ফারুক হোসাইন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্যাহ।

জানা যায়, ওই শিক্ষকরা চলতি বছর ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ কয়েকটি সরকারি দফতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির নানা অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। শিক্ষকদের দাবি, শুনানিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ও শিক্ষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

শিক্ষকরা জিডিতে উল্লেখ করেন, গত বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কয়েকজন শিক্ষক স্বাস্থ্যবিধি মেনে ডিনস কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে সৌজন্য আলোচনা করছিলেন। এই অবস্থায় তাঁরা খবর পান, মামুন নামের এক বহিরাগত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন বহিরাগত ডিনস কমপ্লেক্সের সামনে রাখা গাড়ি ও এগুলোর নম্বরপ্লেট গোপনে মোবাইলে ছবি তুলছে ও ভিডিও ধারণ করছে।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে গিয়ে তারা ঘটনার সত্যতা পান। ছবি ও ভিডিও ধারণের কারণ জানতে চাইলে বহিরাগতরা সেখান থেকে চলে যান। তবে যাওয়ার সময় তারা শিক্ষকদের দিকে আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। এই ঘটনায় তাঁরা শঙ্কিত। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে তাঁদের নেতৃত্বে শিক্ষকদের ওপর ব্যক্তিগত হামলা হতে পারে এবং রাস্তাঘাটে তাঁদের গাড়িগুলোর ক্ষতি করা হতে পারে।

জিডিতে আরও বলা হয়েছে, ইতোপূর্বে এই মামুন নানাজনের প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও এই ধরণের বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে কীভাবে চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে, তা তাঁদের কাছে রহস্যময় মনে হচ্ছে। এই অবস্থায় তাঁরা ঘটনা তদন্ত করে পুলিশ প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিশ^বিদ্যালয় স্কুলের শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনের বক্তব্য নিতে তাকে একাধিকবার ফোন ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এসএম এক্রাম উল্যাহ বলেন, ইউজিসিতে বর্তমান প্রশাসনের দুর্নীতি-অনিয়মের শুনানিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এটা হতে পারে। এছাড়া যারা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের ভয় দেখানোর একটা অপচেষ্টা হতে পারে। কিংবা তাঁদের ক্ষতিপ্রস্ত করার জন্যই হয়তো ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। পুলিশ শাসন তদন্ত করলেই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।

জানতে চাইলে প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ক্যাম্পাসে যে কোন সভা, অনুষ্ঠান করতে হলে প্রক্টর দফতরকে অবহিত করতে হবে। অভিযোগকারী শিক্ষকরা তাদের সভার বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। তবে তারা যেহেতু থানায় অভিযোগ করেছে আমরা তৎপর থাকবো কেউ যেন ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে।

  • 52
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে