রামেক ইন্টার্নদের ক্ষমা করে দিলেন মুক্তিযোদ্ধা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২০; সময়: ১০:০৪ অপরাহ্ণ |
রামেক ইন্টার্নদের ক্ষমা করে দিলেন মুক্তিযোদ্ধা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলী। বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ করলে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা ওই মুক্তিযোদ্ধা ও তার ছেলেকে মারধর করেন। তবুও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা যখন হাত ধরে ক্ষমা চাইলেন তখন মন গলে গেল মুক্তিযোদ্ধার। ক্ষমা করে দিলেন অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের।

জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়। গত ২ সেপ্টেম্বর ইসহাক আলীর স্ত্রী পারুল বেগমকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার মৃত্যু হয় বিনা চিকিৎসায়। চিকিৎসকদের ডাকলেও কেউ আসেনি। এ সময় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলামকে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বিকেলে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাকিবুল মায়ের দাফনের কাজে অংশ নেন। হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলীকেও মারধর করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে শনিবার (৫ সেপ্টম্বর) মানববন্ধন করেন রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ইসহাক আলী দুই ইন্টার্নসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। এ দিন মুক্তিযোদ্ধারাও জেলা প্রশাসককে একটি স্মারকলিপি দেন।

সোমবার দুপুরে রাজশাহী সার্কিট হাউসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। সেখানে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী। তাদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসক শোভন সাহা ও আবদুর রহিম মুক্তিযোদ্ধার কাছে ক্ষমা চান।

এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নগরীর রেলগেট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. আবদুল মান্নান বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। সেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ক্ষমা চেয়েছেন।

মামলার বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা বলেছি মামলা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে পারব না। তখন প্রশাসন বলেছে, মামলা তারা দেখবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, কবিকুঞ্জের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, রবিউল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।

  • 56
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে