বাগমারা তাহেরপুর ডিগ্রী কলেজে জাল সনদে ১৩ বছর শিক্ষকতা!

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২০; সময়: ৮:৩৮ অপরাহ্ণ |
বাগমারা তাহেরপুর ডিগ্রী কলেজে জাল সনদে ১৩ বছর শিক্ষকতা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর ডিগ্রী কলেজে জাল নিবন্ধন সনদ দিয়ে সমাজকল্যান বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে বহাল তবিয়তে চাকুরী করে যাচ্ছেন রয়েছেন রাশেদুজ্জামান নামে এক প্রভাষক। সেই সাথে র্দীঘদিন থেকে সরকারি অংশের বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। বেসরকারি শিক্ষক প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ তার নিবন্ধন সনদ যাচায় করলে সদনটি জাল বলে প্রমানিত হয়েছে। সেই মর্মে বেসরকারি শিক্ষক প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)’র সহকারি পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরকৃত একটি চিঠি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাশেদুজ্জামানের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল বলে উল্লেখ করে একটি চিঠি রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করেন। তার পরেও চাকুরিতে বহাল রয়েছেন সেই প্রভাষক বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, (এনটিআরসিএ) কর্তৃক শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচায় প্রসঙ্গে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রাশেদুজ্জামান, পিতা আখতারুজ্জামান, সাং গোপালপাড়া, থানা দূর্গাপুর, রাজশাহীর রোল, রেজি: সন ও পরিক্ষা ২২০৬০০৯৮ ৩য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০০৭ সনদ প্রদান করে বাগমারা তাহেরপুর কলেজে প্রভাষক পদে সমাজকর্ম বিষয়ে কর্মরত রয়েছেন। তার নিবন্ধন সনদ সম্পর্কে (এনটিআরসিএ)’র মন্তব্যে উল্লেখ করা হয়, সনদটি তার সঠিক নয়। উত্তীর্ণ রোল নম্বরটি অন্য ব্যক্তির। প্রকৃত রোল নম্বারধারী নাম মোস্তাফিজুর রহমান, পিতা আব্দুল হামিদ শাহ্, প্রাপ্ত নম্বর আবশ্যিক -৪২ ঐচ্ছিক:-৪১। এ মর্মে উল্লেখিত বর্নিত ১ নং সনদধারী জাল ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে মর্মে প্রমানিত হয়েছে। বিধায় উক্ত জাল ও ভূয়া সনদধারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংশ্লিট প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক থানায় মামলা দায়ের পূর্বক অত্র অফিসকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সনদ যাচায় চিঠিতে অনুলিপি হিসাবে ১ নং সিস্টেম এনালিস্ট (এনটিআরসিএ) ঢাকা কে পত্রটি (এনটিআরসিএ)র ওয়েব সাইডে আপলোড করাসহ অফিসার ইনচার্জ রাজশাহী সদর থানাকে প্রদান করা হয়। গত ১৯ ফেব্রয়ারি ২০২০ ইং তারিখে সেই চিঠি ইস্যু হওয়ার পরেও এ বিষয় রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করে নাই বলে অভিযোগ উঠেছে।

এর আগে গত ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর তারিখে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ঢাকা চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করেন রাজশাহী দূর্গাপুর উপজেলার গোপালপাড়া গ্রামের মো. ফারুক হোসেন।

সেই আবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর কলেজে প্রভাষক সমাজকর্ম বিষয়ে কর্মরত দূর্গাপুর উপজেলার গোপালপাড়া গ্রামের আখতারুজ্জামানের ছেলে রাশেদুজ্জামান ২০০৭ সালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন সনদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত আছেন। যার রোল ও নিবন্ধন নম্বর ২২০৬০০৯৮ এবং প্রাপ্ত শতকরা নম্বর ৪৭.০০। তার সনদটি যাচায় পূর্বক রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয় ওই আবেদনে। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ইং তারিখে বেসরকারি শিক্ষক প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ রাশেদুজ্জামানের নিবন্ধন সনদ যাচায় করে সনদটি জাল বলে প্রমানিত হয়েছে।

সেই মর্মে বেসরকারি শিক্ষক প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)’র সহকারি পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরকৃত একটি চিঠি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাশেদুজ্জামানের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচায় প্রসঙ্গে সনদটি জাল বলে উল্লেখ করে একটি চিঠি রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ইস্যু করা হয়। কিন্তুু এখন পর্যন্ত ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে। জালিয়াতি করে ভূয়া নিবন্ধন সনদ দিয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষক র্দীঘদিন যাবত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছে এবং চাকুরিতে বহাল রয়েছে।

এ বিষয় প্রভাষক রাশেদুজ্জামানের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি সঠিক নয়। এ বিষয় মাথা না ঘামাতে এ প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন।

এ বিষয় তাহেরপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেনের যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এব্যাপারে আমাকে জেলা শিক্ষা অফিসসহ কোন প্রতিষ্ঠান থেকেই চিঠি দেয়া হয়নি। এছাড়াও ২০০৭ সালে ওই শিক্ষক নিয়োগ পান। আমি অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করি ২০১৪ সাল থেকে। আর বড় কথা হচ্ছে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তিতে সমস্ত কাগজপত্র পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই ছাড়া নিয়োগ হওয়ার কথা না। এখন তো ডিজিটাল যুগ। সংশ্লিষ্ট নম্বারে ক্লিক করলেই তো আসল কি নকল পাওয়া যাবে।

এ বিষয় রাজশাহী আঞ্চলিক জেলা শিক্ষা অফিসের পরিচালকের নম্বারে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে নাই।

  • 2.3K
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে