রাজশাহীতে বৃষ্টির দোহাই দিয়ে সবজির দাম বেশি নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২০; সময়: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে বৃষ্টির দোহাই দিয়ে সবজির দাম বেশি নেয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের বাজারগুলো নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম বেড়েই চলেছে। এতে করে করোনাকালীন সময়ে ব্যাপক ভোগান্তি ও কষ্টের মধ্যে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর নিম্ন আয়ের মানুষজন। আলু থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি সবজির দাম আকাশচুম্বী। প্রতিনিয়ত বাড়ছে সবজির মূল্য। এ কারণে আরো বেকায়দার মধ্যে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। তাই কম আয়ের মানুষ ও সবজি ক্রেতারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

যাতে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম মানুষের নাগালের মধ্যে আসে। এ ছাড়া পরিবার-পরিজন বিপাকে পড়বেন তারা। গত বেশ কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত না হলেও ব্যবসায়ীরা বৃষ্টির দোহাই দিয়ে একাধারে বিভিন্ন ধরণের সবজির দাম বাড়িয়ে চলেছেন। ক্রেতারা বলছেন, সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা নিজ ইচ্ছাতেই দাম বাড়াচ্ছেন। যদিও তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে। এ জন্য ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে সবজি কিনতে হচ্ছে। কম দামে কিনতে পারলে তারা কম দামেই বিক্রি করবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরসহ আশেপাশের উপজেলায় নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম বর্ষাকাল শুরু হওয়ার পর থেকেই বাড়তে শুরু করেছে। প্রথমে দাম বাড়লেও তা কিছুটা নাগালের মধ্যেই ছিল। করোনাকালীন সময়ে কাজ না পেয়ে অনেক মানুষই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেননা। যখন নিম্ন আয়ের মানুষের পরিবারের সদস্যদের দুই বেলা দুই মুঠো ভাত তুলে দেয়াই কষ্ট সাধ্য হয়ে যাচ্ছে তখন বাড়তি দাম দিয়ে সবজি কেনা প্রায় অসম্ভব।

সরজমিনে রাজশাহী মহানগরীর বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে, বাজারে পর্যাপ্ত সবজি থাকা সত্বেও অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর বাজারগুলোতে আলু, পটল, লাউ, পুুঁইশাক, কাকরল, পেঁপে, লাল শাক, সবুজ শাক, বেগুন, কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি, ঝিংগা, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অনেকে কিনতে এসে ঘুরে যাচ্ছেন বলেও শোনা গেছে। প্রায় সবজি বর্তমানে ৫০ টাকা কেজির উপরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজশাহীর কাঁচা বাজারগুলোতে কয়েকদিন আগে লাউ ছোট-বড় ভেদে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, পুুঁইশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, লাল ও সবুজ শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা কেজি, পটল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি, বরবটি ৬০ টাকা কেজি, ঝিংগা ৪০ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ২৫০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ দেশি ৪৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি এবং রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি। গত সপ্তাহের দিকে বর্তমানের তুলনায় দাম কম ছিল কিন্ত বর্তমানে আবার বেড়ে গেছে।

নগরীর কোর্ট স্টেশন বাজারে সবজি কিনতে আসা শহিদুল নামের এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে আমাদের মতো কম আয়ের মানুষের জন্য কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। বাজারে আমদানি থাকার পরেও দাম বেশি মেনে নেয়ার মতো নয়। যেভাবে দাম বেড়েছে সেভাবেতো আর আমাদের আয় বাড়ছেনা। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ বা বাজার মনিটরিং করা জরুরী। নগরীর লক্ষীপুর বাজারে সবজি কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, এখন সবজির দাম নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। নাহলে কম আয়ের মানুষের অনেক সমস্যা হবে।

শুধু রাজশাহী মহানগরীর বাজারগুলোতেই নয়। নগরের বাইরের বিভিন্ন উপজেলাগুলোর বাজারগুলোতেই সবজির দাম অনেক বেশি বলে খবর পাওয়া গেছে।

সবজি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমদানি বেশি থাকলেও পাইকারি বাজারে দাম বেশি রয়েছে। কম দামে কিনতে পারলে কম দামে বিক্রি করা হবে। আমদানি আরো বেশি হলে দাম কমে যাবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঠিয়ে বাজার মনিটরিং ও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • 57
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে