করোনার থাবায় বড় ক্ষতির মুখে রাজশাহীর স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা (ভিডিওসহ)

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে রাজশাহীর স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। মার্চের ২৬ তারিখ থেকে লকডাউনে টানা দুই মাস বন্ধ থাকে সকল মার্কেট। এরপর গত ৩১ মে লকডাউন তুলে নেওয়ার পর খুলে দেওয়া হয় মার্কেট। ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বেঁধে শুরু করে তাদের কার্যক্রম। অথচ মার্কেট খুললেও ব্যবসায়ে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসেনি।

মার্কেট খোলা থাকলেও রাজশাহীর স্বর্ণপট্টি প্রায় জনশূন্য। কাস্টমার নেই বললেই চলে। কম দামে লকডাউনের পূর্বে অর্ডার নিয়ে করোনার কারণে স্বর্ণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোকসান গুণেই ক্রেতাদের সরবরাহ করা থেকে শুরু করে দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতনসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহী স্বর্ণপট্টির স্নেহা মনি জুয়েলার্সের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মূলত ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন। আর স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যখন মার্কেটে স্বর্ণের দাম যা থাকে সে দাম অনুযায়ী অর্ডার নেয়। পরে দাম বাড়লেও আমরা পুরোনো অর্ডারে দাম বাড়াতে পারি না। আবার দাম কমলেও তা কমাতে পারি না।

তিনি বলেন, লকডাউনের পূর্বের ৪৮-৫০ হাজার টাকা ভরি দামে আমরা যেসকল অর্ডার নিয়েছিলাম লকডাউনের পর সেই অর্ডার আমাদেরকে ৭৫-৭৭ হাজার টাকা ভরি দাম দিয়ে পূরণ করতে হয়েছে। কারণ লকডাউনের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে গেছে। এতে করে আমাদের প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

ডালিয়া জুয়েলারি হাউসের মালিক তৌহিদুল ইসলাম তুহিন জানান, করোনা ভাইরাসের থাবায় পুরো বিশ্বের অর্থনীতিতেই বড় একটি ধাক্কা লেগেছে। এই মহামারির কারণে জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণেই মূলত জনগণ আমাদের স্বর্ণের দোকানে আসতে পারছেনা এবং পূর্বের বকেয়া টাকাও পরিশোধ করতে পারছে না। এজন্যই মূলত আমাদের ব্যবসা বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়েছে।

রহমান জুয়েলার্সের মালিক আমিনুর রহমান আমিন জানান, লকডাউনে থেকে আমাদের প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। কম দামে অর্ডার নিয়ে বেশি দামে অর্ডার পূরণ করায় আমাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কতদিন সময় লাগবে সে বিষয়ে বলা সম্ভব না। কারণ এখনও মহামারির সময় চলছে। সরকারের কাছে আমরা প্রণোদনার জন্য আবেদন ও করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। তবে সরকারের কাছে আমাদের আরেকটি আবেদন যে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে আমরা অনেক উপকৃত হবো।