কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাচীর ভাঙ্গা ও মুজিব বর্ষে রোপনকৃত গাছ কাটায় ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২০; সময়: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ |
কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাচীর ভাঙ্গা ও মুজিব বর্ষে রোপনকৃত গাছ কাটায় ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী পবা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও ছাত্র-ছাত্রীদের সুষ্ঠ পাঠ দানের লক্ষে নির্মানকৃত প্রাচীর ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে রোপনকৃত ৭ টি গাছ জোর করে কেটে ফেলার ঘটনায় কাশিয়াডাঙ্গা থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সারিকুল ইসলাম। গত ৩০ আগস্ট কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর এ অভিযোগ দেন প্রধান শিক্ষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট সকাল ৯ টার দিকে কাশিয়াডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সেন্টার পাড়া এলাকার অলি আহাম্মেদের ছেলে ও কাশিয়াডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন ও চিতলকুল এলাকার মৃত ময়িজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে আজগর আলীর নির্দেশে এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে আব্দুর রশিদ রানা, আকবর আলীর ছেলে মিজান ও রাজু, দুলালের ছেলে নাঈম, মৃত লজের মন্ডরের ছেলে দুলাল ও মুকুল কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাসে নির্মানকৃত প্রাচীর জোর করে ভাঙ্গে ফেলে এবং মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে রোপনকৃত ৭ টি গাছ কেটে ফেলে।

সকালে বিষটি স্কুলের নাইট গার্ড নাজিম উদ্দিন মুঠো ফোনে প্রধান শিক্ষক সারিকুল ইসলাম কে জানায়। এর পর সকাল ১০ টার দিকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষক হড়গ্রাম ইউপির ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দুলাল হাসান, ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, মাজেদুল ইসলামসহ স্থানিয়দের ভাঙ্গা প্রাচীর ও মুজিবর্ষে রোপনকৃত কাটা গাছ দেখান। বিষটি স্কুলের ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও শিক্ষক ও স্থানিয়দের সাথে আলোচনা করে কাশিয়াডাঙ্গা থানায় ৮ জন কে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

অপর দিকে, কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাড়ার জনগনের চলাচলের জন্য স্কুলের উত্তর পাস দিয়ে কোন রাস্তার প্রয়োজন নেই বলে পবা উপজেলা চেয়ারম্যান, হড়গ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপির ১ নং ওয়ার্ড ও ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের সুপারিসকৃত এবং এলাকার ১০০ মানুষের গনস্বাক্ষরসহ একটি আবেদন পবা উপজেলে নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রদান করেছেন। ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পাড়ার মানুষের জন্য বিশ্ব রোড থেকে ১৪ ফিট চড়া ও ৫০ ফিট লম্বা রাস্তা এবং প্রতিটি বাড়ির ভায়া ৬ ফিট রাস্তা নির্মান করা আছে। এ রাস্তা ব্যবহারে এলাকাবাসী সন্তুুষ্ট। স্কুলের পরিবেশ রক্ষায় স্কুলের উত্তর পাস দিয়ে কোন নতুন রাস্তার প্রয়োজন নেই।

কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সারিকুল ইসলাম জানান, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বখাটে যুবকদের উৎপাত ও ইভটিজিং থেকে রক্ষায় স্কুলের উত্তর পাসে প্রাচীর নির্মান করা। এবং মুজিব বর্ষ উপোলক্ষে স্কুলের প্রাচীরের ভেতরে ৭ টি গাছ রোপন করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ কে না জানিয়ে রাস্তা করার জন্য জোর করে তারা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে ও গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় সুষ্ঠ বিচার ও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানায়।

এ বিষয় পবা উপজেলার হড়গ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমের উত্তর পাসে স্কুলে প্রাচীর নির্মান করা হয়। ওই প্রাচীরের কারনে স্কুলে ক্লাস রুমের জানালায় বখাটেদের উৎপাত থেকে রক্ষা ও নিরাপদে ক্লাশ করতে পারে ছাত্র-ছাত্রীরা। মুজিব বর্ষে আমি নিজে গিয়ে গাছ রোপন করেছি আনুষ্ঠানিক ভাবে।

তিনি আরো বলেন, কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এক সময় বিএনপির সক্রিয় নেতা খোলস বদলে আওয়ামী লীগ হয়েছে ফারুক হোসেন। তার নির্দেশে যারা প্রাচীরটি ভেঙ্গে ফেলে ও মুজিব বর্ষের গাছ কেটেছে রানা, রাজু, দুলাল, নাঈম, মুকুল এরা ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে কাজ করেছে। ভোট কেন্দ্রে বোমা বাজি করেছে চোখের সামনে। তারা এমন ন্যক্কার জনক কাজ করেছে।

তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনে বোমাবাজি এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্রে লাঠি সোটা ও রেল লাইনের পাথর ছুড়ে হামলা চালিয়ে ছিলো আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের উপরে তারা। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ ঘটনায় এলাকার ব্যপক উত্তেজনা বিরাজ করছে স্থানিয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও এলাকাবাসীর মাঝে। সেই সাথে স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন ও আজগর আলীর সাথে একাধিক বার তাদের মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বলেন, বিষটি শুনে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি আমি। এ বিষয় কাশিয়াডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুলের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা ও গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় জড়িত ৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষটি তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।

  • 39
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে