একই কর্মস্থলে যুগ পার বরেন্দ্রের অর্ধশত কর্মকর্তার

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২০; সময়: ৪:৪২ অপরাহ্ণ |
একই কর্মস্থলে যুগ পার বরেন্দ্রের অর্ধশত কর্মকর্তার

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : উত্তরাঞ্চলে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। প্রতিষ্ঠানটি বৃহৎ এ অঞ্চলে গত ৩ যুগ ধরে কাজ করছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির জেলা এবং উপজেলা কার্যালয়গুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পোস্টিং নিতে চান না। তাদের পছন্দ বিএমডিএর প্রধান কার্যালয় রাজশাহী।

তত্ত্বাবধায়ক ও নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পদের অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী দেড় যুগ ধরে প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। এখানেই তারা নির্বিঘ্নে চাকরি করছেন বছরের পর বছর। এতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রধান কার্যালয়ে দীর্ঘ সময় অবস্থান করায় প্রতিষ্ঠানটির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া, কৃষক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জানা গেছে, বিএমডিএর প্রধান কার্যালয়ে সর্বোচ্চ ৭০ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে অবস্থান করছেন ১৫২ জন। এদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ সময় প্রধান কার্যালয়ে রয়েছেন। অনেকেই রয়েছেন ২০ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত। অদৃশ্য কারণে এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রধান কার্যালয় থেকে অন্যত্র বদলি করা হয় না। দীর্ঘ সময় প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান করায় অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। সাত কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে ও দুর্নীতির প্রমাণ সংবলিত সব নথি জব্দ করেছে।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ে প্রেষণে প্রজেক্ট ডিরেক্টর (পিডি) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। একইভাবে নির্বাহী ও সহকারী প্রকৌশলী ও অন্য কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা দীর্ঘ সময় থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টে প্রেষণে কর্মরত আছেন।

গত ২০ বছর ধরে বিএমডিএ প্রধান কার্যালয়ে অবস্থানরত আবদুর রশিদ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি গত ৫ বছর বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাত্র সাড়ে ৭ মাস আগে সেখানে শ্যাম কিশোর রায় (যুগ্ম সচিব) নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এছাড়া আবুল কাশেম সরকার এবং শামসুল হুদা নামের দু’জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে ১৫ বছর ধরে চাকরি করছেন।

নির্বাহী প্রকৌশলীদের মধ্যে শিব্বির আহমেদ প্রধান কার্যালয়ে রয়েছেন ২০ বছর। তিনিও একটি প্রকল্পের পিডি। ২০ বছর রয়েছেন আরেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম মাহফুজুর রহমান। আরেক নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান এবং তার স্ত্রী রুবিনা খাতুন রয়েছেন ১৫ বছর। এছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ এবং ইকবাল হোসেন ১৫ বছর থেকে রয়েছেন। শহিদুর রহমান এবং নাজিরুল ইসলাম নামের আরও দু’জন নির্বাহী প্রকৌশলী ১০ বছর ধরে প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান করছেন।

সহকারী প্রকৌশলী সানজিদা খানম এবং রেজাউল করিম প্রধান কার্যালয়ে রয়েছেন ১০ বছর। ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান ১৫ বছর থেকে রয়েছেন। সহকারী হিসাবরক্ষক রবিউল ইসলাম রয়েছেন ১০ বছর। আরেক সহকারী হিসাবরক্ষক শাহ জামান ২০ বছর থেকে প্রধান কার্যালয়ে চাকরি করছেন। সহকারী কোষাধ্যক্ষ আবদুর রাকিব রয়েছেন ১০ বছর। প্রধান সহকারী ওয়াজেদ আলী রয়েছেন প্রায় ১৫ বছর। এছাড়া আরও অনেক কর্মকর্তা এবং কর্মচারী প্রধান কার্যালয়ে দীর্ঘ সময় থেকে চাকরি করছেন। এদের বদলি করা হয়নি।

এদিকে রাজশাহী প্রধান কার্যালয়ে তিনজন নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রয়োজন হলেও রয়েছেন ১০ জন। সহকারী প্রকৌশলী পদেও একই অবস্থা। আর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং কর্মকর্তারাও দীর্ঘ সময় থেকে প্রধান কার্যালয়ে চাকরি করছেন। ফলে বিএমডিএর জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের রিজিয়ন এবং জোন কার্যালয়গুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত সচিব (নির্বাহী প্রকৌশলী) সুমন্ত কুমার বসাক বলেন, প্রধান কার্যালয়ে জনবলের বিষয়টি নির্দিষ্ট করা বলা যাবে না। বিএমডিএর অর্গানোগ্রাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত অর্গানোগ্রাম হওয়ার পর জনবল কী পরিমাণ লাগবে তা নির্দিষ্টভাবে বলা যাবে। তিনি বলেন, মাঠে কাজকর্ম বৃদ্ধি পেলে অনেককেই বদলি করা হবে। এছাড়া বদলি প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এছাড়া এ ব্যাপারে অধিক তথ্যের জন্য বিএমডিএর মনিটরিং অফিসারের সঙ্গে এ প্রতিবেদকে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি। সূত্র- যুগান্তর

  • 226
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে