রাজশাহী জেলা পুলিশে শুদ্ধি অভিযান

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২০; সময়: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী জেলা পুলিশে শুদ্ধি অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার পুলিশের সাম্প্রতিক বিতর্কিত কর্মকান্ড প্রকাশ্যে আসায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে রাজশাহী জেলা পুলিশে। তিন দিনে রাজশাহী জেলা পুলিশের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ির ১৭০ জন কনস্টেবলকে বদলি করা হয়েছে।

বিশেষ করে যেসব পুলিশ সদস্য বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ তথা মাদক জোনখ্যাত থানা ও ফাঁড়ি এলাকায় পোস্টিং নিয়ে বছরের পর বছর ঘুরেফিরে থাকছিলেন, তাদের আকস্মিকভাবে বদলি করা হয়েছে। তবে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ বলছেন, মূলত এক থানা বা ফাঁড়িতে অথবা জায়গায় যারা দুই বছরের বেশি সময় ছিলেন তাদেরই বদলি করা হয়েছে।

এদিকে, সংশ্লিষ্টরা বদলি আদেশ বাতিলে ব্যাপক তদবিরও শুরু করেছেন। তবে জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়ায় তারা এরই মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও এ বদলিকে শুদ্ধি অভিযান না বলে জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বদলি ও পদায়নের এ পদক্ষেপ পুলিশের রুটিন কাজ।

রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, এসব বদলি স্বাভাবিক ও পুলিশের রুটিন কাজ। তিনি আরও বলেন, একই থানা ও ফাঁড়িতে যাদের দুই বছরের বেশি হয়েছে শুধু তাদেরই বদলি করা হয়েছে।

জানা গেছে, রাজশাহীর বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িতে কর্মরত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও উপ-পরিদর্শকদেরও (এসআই) একই নিয়মে বদলি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যারা একই কর্মস্থলে দু’বছরের বেশি সময় রয়েছেন।

জানা গেছে, ৭ আগস্ট মাদক জোনখ্যাত জেলার গোদাগাড়ী থানার ১৮ জন কনস্টেবলকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। এসব কনস্টেবলের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের যেমন অভিযোগ রয়েছে তেমনি বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে গভীর যোগাযোগেরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এসব কনস্টেবল মাদক সম্রাটদের চর হিসেবে কাজ করেন। এসব কনস্টেবলকে জেলার মধ্যে বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িতে বদলি করা হয়েছে যেগুলোয় কেউ সহজে বদলি হতে চান না।

অন্যদিকে রাজশাহীর আরও দুটি মাদকপ্রবণ এলাকা বাঘা ও চারঘাট থানা ছাড়াও পুঠিয়া থানার বেশকিছু কনস্টেবলকে বদলি করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, গোদাগাড়ী, বাঘা, পুঠিয়া ও চারঘাট থানায় থাকতে থাকতে অনেক পুলিশ সদস্য নিজেরাই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন।

জানা গেছে, রাজশাহীতে পুলিশের অনেকেই আছেন যারা এক থানায় কনস্টেবল হিসেবে বদলি হয়ে এসে পদোন্নতি নিয়ে কিছু সময়ের জন্য অন্য থানায় বা কোর্টে অথবা ডিবি-এসবিতে যান। কয়েক মাসের মধ্যে তদবির করে আবার আগের থানায়ই ফিরে আসেন। এদের কেউ কেউ একই থানায় ঘুরেফিরে ৫-৭ বছর কাটিয়ে দেন। অনেকেই জেলাতেই কাটাচ্ছেন ১০ বছরের বেশি সময়। কেউ কেউ কিছু সময়ের জন্য পার্শ্ববর্তী নাটোর, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ অথবা নওগাঁ জেলায় কিছু সময় থেকে আবার ফিরছেন রাজশাহী জেলায়। এদিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার ১৮ জন কনস্টেবল একযোগে বদলি আদেশ পাওয়ার পর তাদের অনেকেই জোর তদবির শুরু করেছেন।

একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, যেসব কনস্টেবলকে বদলি করা হয়েছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও রয়েছে। অনেক এএসআই ও এসআই রয়েছেন যারা কনস্টেবলদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধীর কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। এদেরই মূলত বদলির তালিকায় আগে আনা হয়েছে। সূত্র- যুগান্তর

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে