বাঘায় থামছেনা স্বজন হারানোর শোকের মাতম

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২০; সময়: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ |
বাঘায় থামছেনা স্বজন হারানোর শোকের মাতম

নিজস্ব প্রতিবেদক,বাঘা : শ্রেণী পেশার ছোট বড় সব বয়সের নারী পুরুষের হাতে হাতে ফেস্টুন। এর কোনটাতে লেখা রয়েছে, নাজমুলকে মারলো যারা ফাঁসির দড়িতে ঝুলবে তারা,আমাদের আকুতি বিলোপ হোক সন্ত্রাসী, আরিফার বাবাকে ফিরিয়ে দাও, আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরে খুনিরা কেন বাইরে ঘুরে, সন্ত্রাস মুক্ত এলাকা চাই, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, মৃত্যু হয়েছে নির্মম,বিচার হবে নির্মম, কোন কিছু বুঝিনা ফাঁসি ছাড়া মানবোনা, এলাকাবাসি বেঁধেছে জোট,খুনিদের ফাঁসি হোক। শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ জোট বেঁেধ নাজমুৃলকে হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নামেন, হাতে হাতে ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে। শুধু হত্যাকারিদের বিচারের দাবিই ছিলনা, স্কুল ছাত্রী উত্ত্যক্তকারীর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিও ছিল তাদের।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে শুরু করে ঘন্টাব্যাপি প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘটনাস্থল বাঘা-লালপুর সীমান্তের সুলতানপুর ও মনিহারপুর গ্রামের ভোলার মোড় এলাকা থেকে,নাজমুলকে হত্যা ও স্কুল ছাত্রী উত্ত্যক্তকারী প্রধান আসামী সুমনের বাড়ি হয়ে লালপুরের এমআর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। ওই মাঠে সমাবেশে জোট বদ্ধ হয়ে বক্তব্য রাখেন, বাঘা ও লালপুরের জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ। একই দাবিতে বুধবার সকালে হত্যা ও উত্ত্যক্তকারিদের ফাঁসির দাবি করে উপজেলার খানপুর জেপি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এদিকে মানবন্ধন-বিক্ষেভ আর হত্যা মামলায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও থেমে নেই স্বজন হারানোর আহাজারি। নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বৃহসপতিবার এইদিন সেই নিহত নাজমুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে,স্ত্রী,বাবা,মা আর নিকট আত্নীয়দের বিলোপ। নিহত নাজমুলের রেখে যাওয়া ৭মাসের একমাত্র কণ্যা সন্তান কোলে নিয়ে কাঁদছেন স্ত্রী। অকালে স্বামী হারানোর বিয়োগ ব্যথা কোন শান্তনাতেই থামছেনা তার। অবুৃঝ শিশুটির বোঝার বয়স হয়নি,তার বাবা বেঁেচে নেই। সন্তান হারানোর শোকে মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন বাবা,মা আর দুৃই বোন।

উল্লেখ্য, স্কুল পড়ুয়া ভাগ্নিকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মঙ্গলবার সন্ধায় বাঘা-লালপুর সীমান্তের সুলতানপুর ও মনিহারপুর গ্রামের ভোলার মোড় এলাকায় ওই ছাত্রীর মামা নাজমুল হোসেন (২৮)কে কুপিয়ে হত্যা করে বখাটেরা। এ সময় আহত হয় স্কুল ছাত্রীর ভাই তারিকুল ইসলাম ও বাবা শাহজাহান আলী ওরফে বাদশা মাস্টার। নিহত নাজমুল সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমানের একমাত্র ছেলে। নিহতের বাবা বাদি হয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। দায়েরকৃত মামলায় ২ নারিসহ ৬জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাঘার পাশর্^বর্তী লালপুর উপজেলার মনিহারপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বাঘা উপজেলার খানপুর জেপি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক, শাহজাহান আলী ওরফে বাদশা মাস্টারের কন্যা জেপি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে দেখা পেলেই তাকে প্রেম ভালবাসার প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতো একই গ্রামের (মনিহারপুর) আরজেদ আলী ওরফে ভোলার ছেলে সুমন।

বাঘা থানার (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর রাতেই নিহতের বাবা অজিজুর রহমান সুলতানপুর গ্রামের আরজেদ আলীর বখাটে ছেলে সুমনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যাদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে