বাগমারায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের দুর্নীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ!

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২০; সময়: ৮:১৬ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের দুর্নীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের পানি উন্নয়নর বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ধ্বস ও ফাটল। কাজে আনিয়ম ও দূর্নিতির কারনে বাঁধটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলে ভেঙে যাওয়ার আশংকা রয়েছে বাঁধটি।

বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি পরিদর্শন করেন বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার, নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ। পরিদর্শন কালে পায়ে হেটে এবং নৌকায় ঘুরে বাঁধটির বিভিন্ন স্থানের ফাটল পরিদর্শন করেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁশের খাঁচা তৈরি করে বালির ব্যাগ ফেলে বাঁধের ভাঙ্গণ রোধের চেষ্টা করা হয়েছে। এ সময় কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়েন উদ্দীন, ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, ইউপি সদস্য দুলাল উদ্দিন, আমজাদ হোসেন সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কালিকাপুরের কিছু অংশ থেকে মানসিংহপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটার বাঁধে মাটির কাজ শুরু হয়। বাঁধটিতে মাটি ফেলে সংস্কারের জন্য ৬৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘আলম অ্যান্ড ব্রাদার্স’ কাজটি পেলেও রাজশাহীর ঠিকাদার সিজার হোসেন কাজটি দেখভাল করেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বাঁধে দায়সারা ভাবে মাটি ফেলা হয়েছে। বাঁধের নিচ থেকে মাটি কেটে ফেলা হয়েছে বাঁধে। মাটি ফেলার পর সেগুলো বসানোরও কোনো চেষ্টা করা হয়নি। আবার অনেক স্থানে শুধুমাত্র কোদাল দিয়ে আগের মাটি আলগা করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা কয়েক দফা বাঁধা দিয়েও লাভ করতে পারেননি। ফলে কাজ শেষের পরেই বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল ও ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। মানসিংহপুর এলাকার নাককাটি বিলের মাঝামাঝি স্থানে বিলের অংশে তৈরি হয়েছে ফাটলের। আরও কয়েকটি স্থানে মাটি সরে গেছে ওই বাঁধের।

স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারি ৬৭ লাখ টাকার অর্ধেকও ব্যয় করা হয়নি বাঁধ সংস্কারে। দায়সারা ভাবে কাজ শেষ করা হয়েছে। বন্যার পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশংকা করছেন। এতে এলাকা প্লাবিত হওয়া ছাড়াও ফসল এবং মাছের ক্ষতি হবে। বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুনরায় অধিক টাকা বরাদ্দ নেওয়ার জন্য দায়সারা ভাবে কাজ করা হয়েছে। বাঁধের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা ঠিক করে দেওয়া হবে জানিয়েছেন কাজের স্থানীয় ঠিকাদার। কাজটির তদারককারী কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহীর উপসহকারী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, এরকম অভিযোগ বিষয়ে জানা নেই।

উপজেলা চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার বলেন, নিম্ন মানের কাজ করায় বাঁধের অনেক স্থানে ফাটল ও ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে হুমকিতে পড়েছে বাঁধটি। বাঁধটি ভেঙ্গে যাতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত না হয় সে জন্য স্থানীয় লোকজন দিয়ে মেরামতের কাজ চলছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে