বাঘায় চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় খাদ্য বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত ১০ টাকা কেজি দরের বিশেষ ওএমএস এর চাল বিতরণে এক ডিলারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারকে আহব্বায়ক করে ৩ সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০৭-০৭-২০২০) তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা।
জানা যায়, সুবিধাভূগী ৮৪০ জন কার্ডধারিকে বিশেষ ওএমএস এর চাল সরবরাহের জন্য গত জুন মাসে, চার কিস্তিতে মোট ১৬ দশমিক ৮০০ মেঃ টন চাল উত্তোলন করেন মেসার্স এসআরপি ট্রেডার্স এর সত্বাধিকারি, বাঘা পৌরসভার অর্ন্তভূক্ত ডিলার শাহিন আলম। সর্বশেষ ২৪ জুন, শেষ কিস্তিতে ৪ দশমিক ৮০০ মেঃ টন চাল উত্তোলন করেন তিনি।
প্রতি মাসের চাল প্রতি মাসে সরবরাহের কথা থাকলেও জুন মাসের চাল জুলাই মাসের ৪ তারিখেও পাননি কার্ডধারি ভুক্তভুগিদের অনেকেই। তার প্রতিষ্ঠানে চাল নিতে গিয়ে বন্ধ দেখে ফিরে যান তারা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন কার্ডধারি ভূক্তভুগিরা। সেখানে চাল সরবরাহ না করে বিক্রির অভিযোগও উঠে। গত ৫ জুলাই ভূক্তভুগিদের অভিযোগ পেয়ে ডিলার শাহিন আলমকে চাল বিতরনের নির্দেশ দেন ইউএনও।
এরপর স্থানীয় নারায়নপুর বাজারের চাল ব্যাবসায়ী লালন উদ্দিনের দোকান থেকে ৫০ (পঞ্চাশ) কেজি ওজনের ৪০ (চল্লিশ) বস্তা চাল কিনে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করেন ডিলার। তার প্রতিষ্ঠানে যে বস্তার চাল ঢেলে বিক্রি করছিলেন, সেই বস্তায় সরকারি কোন সিল ছিলনা। পৌর সভার ৪ নং ওয়ার্ডের ভূক্তভূগি সিরাজুল ইসলামের মতো অনেকেই বলেছেন, অভিযোগের পর তারা যে চাল পেয়েছেন, সেটাও নিম্নমানের। চাল ব্যবসায়ী লালন উদ্দিন তার দোকান থেকে চাল কেনার সত্যতা স্বীকার করেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার পলাশ আহম্মেদ বলেন, ২৪ জুন শেষ কিস্তির চাল উত্তোলনের বিষয়টি তিনি জানতেন না। রোববার (৫জুলাই) আমাকে চাল সরবরাহের কথা জানানোর পর সকাল ১০ টায় তার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বন্ধ দেখে ফিরে আসি। পরে আবার চাল বিতরণের কথা জানানোর পর সেখানে গিয়েছিলেন। তবে ওজনে কম দেওয়ার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার শামসুন্নাহার জানান, প্রতিমাসের চাল প্রতি মাসে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে অসুবিধার কারণে কেউ বাদ পরলে, পরে নিতে পারবে। কিন্ত বেশি বিলম্বে নয়। গুদাম থেকে সরবরাহকৃত চালের পরিবর্তে বাজার থেকে কিনে দেওয়ার বিষয়টি জানেন না।
ডিলার শাহিন আলম জানান, ব্যাক্তিগত সমস্যার কারণে চাল সরবরাহ করতে বিলম্ব হয়েছে। খালি বস্তা আগেই বিক্রি করে দিয়ে, সরকারি বস্তার পরিবর্তে চিনির বস্তায় চাল ভরেছি। চাল কিনে দেওয়ার বিষয়ে পরে কথা বলার কথা বলেন তিনি। চাল না পাওয়া কার্ডধারিদের সংখ্যা ৫০ জনের বেশি নয় বলে দাবি করেছেন এই ডিলার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহিন রেজা বলেন, অভিযোগের পর সঙ্গে সঙ্গে ডিলার কে চাল সরবরাহের নির্দেশের পর চাল বিতরন করেছে। তবে সেই চাল বিতরনে কোন অনিয়ম হয়েছে কি-না, সেটা তদন্তের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারকে আহব্বায়ক করে ৩ সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনিয়ম হয়ে থাকলে বিধি মতো ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও।