রাজশাহীতে বন্ধ হয়নি বাতিল বালুমহালে উত্তোলন (ভিডিওসহ)

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২০; সময়: ৩:৫১ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে বন্ধ হয়নি বাতিল বালুমহালে উত্তোলন (ভিডিওসহ)

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে বাতিল হওয়া বালুমহাল থেকে রাতের আধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের সোনাইকান্দি বেড়পাড়া এলাকা দিয়ে প্রতি রাতে এক থেকে দেড়শো ট্রাক বালু তোলা হচ্ছে। সর্বশেষ বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রাতভর বালু তোলা হয় বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

তবে পবা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই এলাকায় বালু তোলার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বুধবার জেলা প্রশাসনে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পবা উপজেলা প্রশাসন। তাদের দাবি ওই এলাকায় বালু উত্তোলনের কোন চিহ্ন নেই। একটি পক্ষ মিথ্য তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করছে।

এদিকে, বেড়পাড়া এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে আটটি ড্রাম ট্রাকে বালু উত্তোলন করে পরিবহন করা হচ্ছে। বুধবার সকালে স্থানীয় এক ব্যক্তি গোপনে ভিডিওটি ধারণ করেন। সারারাত বালু পরিবহনের শেষ টিপ ছিল এটি। এছাড়াও চরে লাইট জালিয়ে ট্রাকে বালু তোলার একটি ছবিও পাওয়া গেছে।

রাজশাহী শহরসহ বঙ্গবন্ধু হাইকেট পার্ক রক্ষা বাঁধের ক্ষতির আশঙ্কায় এই বালুমহাল এবার বাতিল করে জেলা প্রশাসন। হরিপুর ইউনিয়নের মদনপুর, কসবা ও চর হরিপুর মৌজা নিয়ে ছিল এই বালুমহালটি। হাইকোটের নির্দেশে এবার বালুমহালটি বাতিল করা হয়।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার নির্দেশে গত সোমবার সন্ধ্যায় পবা উপজেলা প্রশাসন ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু বালু উত্তোলনের কোন চিহ্ন তারা পাননি। এ ব্যাপারে তারা বুধবার একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

একটি পক্ষ প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করতে ভুল তথ্য দিচ্ছে বলে মন্তব্য করে জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সত্যিই যদি সেখানে বালু উত্তোলন করা হয়; তবে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হরিপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুর রহমান বাদলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এ সময় তিনি বলেন, পবা উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং রাজশাহী জেলা প্রশাসককে আমি নিজে ফোন করে বলেছি। এর পরও বালু তোলা বন্ধ হয়নি। আর আপনার মত সাংবাদিককে বলে লাভ কি। যাদের বন্ধ করার ক্ষমতা তারাই যখন বন্ধ করে না তখন এ নিয়ে কথা বলে কেন প্রশাসনের শত্রু হবো। এ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এই বালুমহালটি জেলা প্রশাসন থেকে বাতিল করা হলেও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ৮ থেকে ১০টি ড্রাম ট্রাকে বালু উত্তোলন শুরু হয়। চলে সকাল পর্যন্ত। সর্বশেষ বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক সঙ্গে সাতটি ড্রাম ট্রাক নেমে বালু তোলা শুরু করে। চলে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত।

হরিপুর ইউনিয়নের মদনপুর, কসবা ও চর হরিপুর মৌজা নিয়ে গঠিত এই বালুমহালটি গত বছর ইজারাদা নিয়ে ছিলেন নগর সেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তবে হাইকোটের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছর বালুমহালটি বাতিল করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু ইজারা দেয়া না হলেও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। গত বছর লোকসান হয়েছে বলে দাবি করে বালু তোলার সময় বাড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন ইজারাদার। জেলা প্রশাসন সেই আবেদন খারিজ করলেও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে